কুন্তল ঘোষকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। —ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত পরিচয়’ নেই কুন্তল ঘোষের। সিবিআই জেরায় এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা। সূত্র মারফত শুক্রবার এমনটাই জানা গিয়েছে। অভিষেকের নাম বলার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন কুন্তল। তৃণমূলের প্রাক্তন নেতার এই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি পাঠান হেস্টিংস থানায়। সেই চিঠির বিষয়ে গত শনিবার অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তার ৩ দিন পর বুধবার প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে কুন্তলকে জেরা করেছে সিবিআই। সেই জেরাতেই অভিষেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ না থাকার কথা কুন্তল জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। গত শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিষেকও দাবি করেছিলেন যে, তিনি কুন্তলকে চেনেন না।
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার করা হয়েছে কুন্তলকে। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। জেলবন্দি থাকার সময় অভিষেকের নাম জড়িয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কুন্তল। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরেই কুন্তল দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পরে ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন বহিষ্কৃত ওই তৃণমূল নেতা। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি পাঠান হেস্টিংস থানাতে। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। বিচারপতি অমৃতা সিন্হাও সেই পর্যবেক্ষণে সম্মতি দেন। এই চিঠি সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। শুক্রবার এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে চায়নি শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, কুন্তলের চিঠি মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই আবহে সিবিআই জেরায় কুন্তলের বয়ান আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
শুক্রবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল কুন্তলকে। চিঠি লেখার জন্য কেউ কি ‘চাপ’ দিয়েছিলেন? সংবাদমাধ্যমের এই প্রশ্নের জবাবে কোনও মন্তব্য করেননি কুন্তল। জেরায় অবশ্য এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা। সিবিআই সূত্রে খবর, চিঠি লেখার জন্য তাঁকে কেউ ‘চাপ’ দেননি বলে জেরায় দাবি করেছেন কুন্তল। অভিষেকের বক্তব্যের পর পরই কুন্তলের অভিযোগ আলাদা গুরুত্ব পেয়েছিল। যদিও জেরায় কুন্তল জানিয়েছেন, অভিষেকের বক্তব্য তিনি সংবাদপত্র থেকে পড়ে জেনেছেন। কুন্তলের পাশাপাশি শুক্রবার তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি ঘোষকেও আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। তাঁদের সকলকে ২ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।