ব্যাঙ্কশাল কোর্টে কুণাল ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
তাঁর দলের কেউ সারদা থেকে টাকা নেয়নি— মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়লেন কুণাল ঘোষ। সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের বাইরে তিনি আবার বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমাকে মুখোমুখি বসানো হোক। আমি মুখোমুখি জেরা চাই।” একই সঙ্গে তৃণমূলনেত্রীর দিকে তাঁরই দলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদের তোপ, “মুখ্যমন্ত্রী কাপুরুষ। নিজেকে বাঁচাতে এখন কর্মিসভা করছেন!”
প্রসঙ্গত, সারদা-কাণ্ডে শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বসু গ্রেফতার হওয়ার পরে নেতাজি ইন্ডোরের দলীয় কর্মিসভায় সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে একযোগে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রেফতারির ‘চক্রান্তের’ প্রতিবাদে তৃণমূল এ দিন কলকাতায় মিছিলও করেছে। অন্য দিকে পার্ক স্ট্রিট থানায় চ্যানেল-১০ সংবাদসংস্থার কর্মীদের দায়ের করা একটি মামলায় কুণালকে এ দিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়েছিল। মামলাটিতে বিচারক তাঁকে ফের ফের জেল হেফাজত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আর কুণাল শুনানি শেষে কোর্ট থেকে বেরনোর সময় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এসেছে ইন্ডোরের কর্মিসভার প্রসঙ্গ।
সারদা-কাণ্ডে মমতার ভূমিকা নিয়ে কুণালের মুখে প্রকাশ্য অভিযোগ এই অবশ্য প্রথম নয়। তাঁকে তৃণমূলনেত্রীর সামনাসামনি বসালে সারদা সংক্রান্ত অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আগেও তিনি দাবি করেছেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর বিচার ভবনের সিবিআই-আদালতে এসে কুণাল তৃণমূলনেত্রীর দিকে সরাসরি আঙুল তোলেন। বলেন, সারদা মিডিয়ার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধা সবচেয়ে বেশি যদি কেউ পেয়ে থাকেন, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার পুজোর ঠিক মুখে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর একই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে তাঁর কটাক্ষ, “যাঁরা সারদার কাছে সুবিধা নিয়েছেন, তাঁরা বাইরে পুজোর উদ্বোধন করে বেড়াচ্ছেন! আর আমি জেলে বসে ঢাকের আওয়াজ শুনব, এ হতে পারে না।”
কুণালের বাক্যবাণ রুখতে পুলিশও যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। কুণাল আগে অভিযোগ তুলেছিলেন, ধাক্কাধাক্কি করে পুলিশ তাঁর মুখ বন্ধ রাখতে চাইছে। পরে অন্য কৌশল নেওয়া হয়। কুণালের কথা যাতে সাংবাদিকেরা শুনতে না-পান, সে জন্য তিনি মুখ খুললেই গলা ফাটিয়ে ‘হা রে রে’ চিৎকার এবং গাড়িতে সশব্দে চাপড় মেরে আওয়াজ তোলা শুরু করে পুলিশ। এ দিন অবশ্য তা হয়নি। আগের মতোই এজলাস-ফেরত কুণালকে ঘিরে পুলিশ ধাক্কা দিতে দিতে গাড়িতে তোলে।
আর তারই মধ্যে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে নিজের বক্তব্য জানিয়ে যান কুণাল ঘোষ।