সোমবার রাতে রিষড়ায় যখন অশান্তি চলছে, তখন কেন্দ্রীয় দলের বৈঠকে দিল্লিতে ছিলেন লকেট। ফাইল চিত্র।
বিজেপির দলীয় কোন্দলে সদ্য নাম জড়িয়েছে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। সেই প্রসঙ্গ টেনেই হুগলির বিজেপি সাংসদকে আক্রমণ করল তৃণমূল। মঙ্গলবার লকেট গিয়েছিলেন রিষড়ায়। কয়েক ঘণ্টা আগেই যেখানে বোমাবাজি হয়েছে। তার জেরে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারাও। লকেট বিকেলে সেখানে পৌঁছে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করেন বলে সূত্রের খবর। এমনকি, তাঁকে বাধা দেওয়া হলে তিনি স্টেশনে বসে পড়ে জানিয়ে দেন, তিনি স্টেশন ছেড়ে যাবেন না। এ প্রসঙ্গেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘লকেটের ব্যাপারটা আলাদা। এর সঙ্গে অশান্তির কোনও সম্পর্ক নেই। দিল্লিতে ওকে অপমান করা হয়েছে। ও সেই অপমানের জ্বালাটা এখানে এসে মেটাচ্ছে।’’ আক্রমণ আরও একটু চড়িয়ে বিজেপি নেত্রী লকেটকে ‘বাচাল’ এবং বিজেপির দলীয় কোন্দলকে ‘শালিকের ঝগড়া’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কুণাল।
সোমবার রাতে রিষড়ায় যখন অশান্তি চলছে, তখন কেন্দ্রীয় দলের বৈঠকে দিল্লিতে ছিলেন লকেট। সেখানে ছিলেন বঙ্গ বিজেপির আরও এক মহিলা সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীও। দু’জনেই যথাক্রমে বঙ্গ বিজেপির দুই নেতা— শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষের শিবিরের বলে রাজনৈতিক মহলে পরিচিত। দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় বৈঠকে ঝগড়া বাধে এই দু’জনের মধ্যেই। রাজনৈতিক সূত্রে খবর, বিজেপির সাংবাদিক বৈঠকে লকেটকে ‘‘নোংরা রাজনীতি কোরো না’’ বলে আক্রমণ করেন দেবশ্রী। এমনকি, লকেটের বিরুদ্ধে সাংবাদিক বৈঠকে একা তাঁর বিষয় নিয়েই কথা বলে যাওয়ার অভিযোগও করেন দেবশ্রী। প্রকাশ্যে আসে বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব।
সেই প্রসঙ্গেও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল বলেন, ‘‘কে বেশি কথা বলবে তাই নিয়ে ঝগড়া। আসলে দুটোই বাচাল। দুই শালিকের ঝগড়া হয়েছে। রিষড়ায় আসলে সেই ঝগড়ারই জবাব দিয়েছেন লকেট। কাল দেবশ্রী যে অপমান করেছেন দিল্লিতে, আজ উনি সেখান থেকে স্টেশনে এসে নেমেছেন। লকেট বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি মাঠেঘাটে কাজ করেন, স্টেশনে বসেন। আসলে গোটাটাই ওদের নিজেদের যুদ্ধ আর সেই যুদ্ধে ভেসে থাকার লড়াই।’’
গত রবি এবং সোমবার রিষড়ায় বিক্ষিপ্ত দু’টি অশান্তির ঘটনা ঘিরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এলাকায়। লকেট সেই পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন। দিল্লি থেকে বিমানে এয়ারপোর্টে নেমে বালি থেকে লোকাল ট্রেনে লকেট রিষড়ায় এসেছিলেন বিকেল ৪টে নাগাদ। তবে লকেটকে ৫টা ১৫-র হাওড়া যাওয়ার ট্রেনে তুলে দেওয়া হয়।