এখানেই মেলে নির্যাতিতার দেহ। —ফাইল চিত্র
১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে কুমারগঞ্জ-কাণ্ডে ধৃত তিন অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করা হলেও তাঁদের পক্ষে কোনও আইনজীবী দাঁড়ালেন না। বুধবার বালুরঘাটের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অভিযুক্তদের পক্ষে আইনি পরিষেবা কেন্দ্র থেকে আইনজীবী নিয়োগের নির্দেশ দেন। এ দিন ধৃত তিন যুবককে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক কিষেনকুমার আগরওয়াল।
অভিযুক্তদের ধরার পরে সাত দিনের মধ্যে ওই মামলার চার্জশিট জমা করা হবে বলে পুলিশ আশ্বাস দিলেও এখনও তা আদালতে দাখিল না করায় সরব বিরোধীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, কুমারগঞ্জের সাফানগরের বেলতোর এলাকায় মাঠে ৬ জানুয়ারি আগুনে পোড়া এক তরুণীর দেহাংশ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গঙ্গারামপুর পঞ্চগ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণীকে গণধর্ষণের পরে চাকু দিয়ে গলার নলি কেটে খুন করে প্রমাণ লোপাটে অভিযুক্তেরা দেহটি পুড়িয়ে দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ এলাকার তিন যুবককে গ্রেফতার করে। বালুরঘাটের জেলা আদালত ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। ধৃতদের জবানবন্দি নেওয়া থেকে শুরু করে পুলিশ ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে। উদ্ধার হয় খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রও।
ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার পরে জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, ৭ দিনের মধ্যে মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।
কিন্তু এখনও তা না হওয়ায় সরব বিরোধীরা। দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়ার দাবি উঠেছে। আরএসপির রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী জানান, নিখিলবঙ্গ মহিলা সঙ্ঘ এ নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সুপার ৭ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। দ্রুত সেই চার্জশিট জমা করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় জড়িত দোষীদের দ্রুত সাজার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু পুলিশ এখনও চার্জশিট দিতে পারেনি।’’
জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, চার্জশিটের প্রক্রিয়া চলছে। সময় মতো আদালতে তা জমা দেওয়া হবে। এ দিন সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী জানান, তিনজন অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করছে। ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ ছিল। এ দিন অভিযুক্তদের আদালতে তুলে পুলিশ ফের হেফাজতে রাখার আবেদন জানায়। বিচারক তা মঞ্জুর করে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ধৃত ৩ জনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।