নিউ মার্কেট চত্বরে হকার-রাজ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন মেয়র। আজ, বুধবার থেকে নিউ মার্কেট চত্বরের ৯টি বাজারের ঝাঁপ খুলবে না। মঙ্গলবার রাতে জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশনের সম্পাদক রাজীব সিংহ জানিয়ে দিয়েছেন, বুধবার থেকে টানা ৭২ ঘণ্টা ওই চত্বরের স্থায়ী ব্যবসায়ীরা বনধ পালন করবেন। নিউ মার্কেটের সামনে হকারদের ‘দৌরাত্ম্য’ ঠেকাতেই বনধের মতো ‘চরম’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ডাক দিয়েছেন সংগঠনের হাজার পাঁচেক সদস্য।
প্রসঙ্গত, আগামী শুক্রবারই হকারদের মনোভাব জানতে সভা ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে হকারদের দাবি শোনার পাশাপাশি তাঁদেরকেও শৃঙ্খলা মেনে চলার পরামর্শ দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই সভার আগেই হকারদের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট এলাকার স্থায়ী ব্যবসায়ীরা বেঁকে বসায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পুর-প্রশাসন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁদের আপাতত বনধ না করার আবেদনও জানিয়েছেন।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানান, বিকেলে ওই সংগঠনের দু’তিন জন প্রতিনিধির সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করা হয়। তাঁদের বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকেও ওই বনধ তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন মেয়র, মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ এবং পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ ওই ব্যবসায়ীদের বনধ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। মেয়র বলেন, “ওঁদের বলেছি আপনাদের অধিকার তো কেউ কেড়ে নিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী হকার সমস্যা নিয়েই তো সভা ডেকেছেন। সেখান থেকে নিশ্চয়ই কোনও সমাধান সূত্র বেরোবে। অন্তত তত দিন অপেক্ষা করুন।” যদিও নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল ট্রেডার্স ফেডারেশনের ওই নেতারা। ফেডারেশনের সম্পাদক রাজীববাবুর বক্তব্য, “এর আগেও বহু বার আলোচনা চেয়ে আবেদন জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি দিয়েছি। কোনও সুরাহা হয়নি।”
রাজীববাবু জানান, আজ, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় গ্লোবের সামনে থেকে হকারদের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে মিছিল করবেন তাঁরা।
সংগঠনের বক্তব্য, কলকাতার ঐতিহ্যশালী নিউ মার্কেট এবং লাগোয়া চত্বর ক্রমশই হকারদের দখলে চলে যাচ্ছে। গত বছরই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুরসভায় দরবার করা হয়েছিল। পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) এবং মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও লিখিত ভাবে সব জানানো হয়েছিল। পরে এ নিয়ে একটি বৈঠকও হয়। তার পরে মার্কেটের সামনে এবং রাস্তার উপর থেকে হকার সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে পুরসভায় সিদ্ধান্তও হয়। কিন্তু প্রায় সাত মাস পরেও কিছুই হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বনধ করতে হচ্ছে বলে দাবি সংগঠনের।