মাসতুতো ভাইবোনের রহস্য-মৃত্যু

তাঁরা মাসতুতো ভাইবোন। থাকতেন কালীঘাটের একই বাড়িতে। সোমবার সন্ধ্যায় সেই বাড়ির একটি ঘরে পাওয়া গেল তাঁদের মৃতদেহ। ওই দুই যুবক-যুবতীর এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম বিশ্বজিৎ মণ্ডল (২৪) এবং মৃতার নাম রিনা সাহা (৩২)। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে কালীঘাট রোডের ওই বাড়িতে যায় পুলিশ। ঘরের দরজা ভেঙে তারা দেখে, গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে যুবকের দেহ। আর রক্তাক্ত অবস্থায় যুবতীর দেহ পড়ে আছে ঘরের বিছানায়। দু’জনের অপমৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:১৯
Share:

তাঁরা মাসতুতো ভাইবোন। থাকতেন কালীঘাটের একই বাড়িতে। সোমবার সন্ধ্যায় সেই বাড়ির একটি ঘরে পাওয়া গেল তাঁদের মৃতদেহ। ওই দুই যুবক-যুবতীর এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম বিশ্বজিৎ মণ্ডল (২৪) এবং মৃতার নাম রিনা সাহা (৩২)। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে কালীঘাট রোডের ওই বাড়িতে যায় পুলিশ। ঘরের দরজা ভেঙে তারা দেখে, গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে যুবকের দেহ। আর রক্তাক্ত অবস্থায় যুবতীর দেহ পড়ে আছে ঘরের বিছানায়। দু’জনের অপমৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই বাড়িতে বেশ কয়েকটি ঘর আছে। বিশ্বজিৎ মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন দোতলায়। একই সঙ্গে থাকতেন তাঁর মাসতুতো দিদি রিনা। বিশ্বজিতের মা ও বাবা এ দিন বিকেলের দিকে বাড়িতে ছিলেন না। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বিশ্বজিতের মা বাড়ি ফিরে দেখেন, দু’টি ঘরের দরজা খোলা। তৃতীয় ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ। ওই মহিলা নিজের ছেলে এবং বোনের মেয়ের নাম ধরে বেশ কিছু ক্ষণ ডাকাডাকি করলেও সাড়া পাননি। তখন তিনি পড়শিদের ডেকে আনেন। তাঁরাও বিশ্বজিৎ-রিনার নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকেন। সাড়া না-পেয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকিঝুঁকি মেরে দেখতে পান, বিছানায় রিনা পড়ে আছেন রক্তাক্ত অবস্থায়। আর সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন বিশ্বজিৎ। রিনার মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন আছে। ঘরে তিন পাতার একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা রাতে ঘটনাস্থলে যান। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে পৌনে ৭টার মধ্যে রিনাকে খুন করা হয়েছে। তাঁর শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। তার মিনিট পনেরো পরে মৃত্যু হয় বিশ্বজিতের। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে বিশ্বজিৎ লিখেছেন, রিনা তাঁকে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার জন্য নানা ভাবে প্ররোচনা দিতেন। তাই তিনি চরম পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিশ্বজিতের মা বলেন, “কী ভাবে এমনটা হল, বুঝতেই পারছি না। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়েও সব ঠিক ছিল।” তিনি জানান, তাঁর বোনের মেয়ে রিনা তাঁদের সঙ্গেই থাকতেন। পরিবারটির সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। বিশ্বজিৎ ও রিনার মধ্যে কোনও গোলমাল হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, রিনার মা বছর দশেক আগে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন। কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন ওই যুবতীর বাবা প্রাণগোপাল সাহাও। এ দিনের ঘটনার পরে পুলিশ বিশ্বজিতের বাবা চিত্তরঞ্জন মণ্ডলকে থানায় নিয়ে গিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement