কসবায় যুবক খুনের ২৪ ঘণ্টা পরেও ঘটনার অন্যতম মূল অভিযুক্ত অধরা। উদ্ধার করা যায়নি খুনে ব্যবহৃত লোহার রডও।
শুক্রবার গভীর রাতে বোসপুকুর রোড থেকে মনোজ সাহু (৩৩) নামে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়। রবিবার মনোজের ময়না-তদন্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের সিন্ডিকেট ব্যবসা ঘিরে গোলমালের জেরেই এই খুন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মনোজকে খুনের অভিযোগে শনিবারই শেখ কুতুবুদ্দিন ওরফে ভোগলু নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে ভোগলু ছাড়াও বিরোধী সিন্ডিকেটের নেতা মুন্না পাণ্ডে নামে আর এক যুবক-সহ কয়েক জনের নাম জানিয়েছিলেন মনোজ। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকেই ধরতে পারেনি পুলিশ।
মুন্না অবশ্য পুলিশের কাছে অপরিচিত নাম নয়। কসবায় সিন্ডিকেট ব্যবসা ঘিরে গোলমালে এর আগেও তাঁর নাম উঠেছে বলে পুলিশের দাবি। শনিবারই ডিসি (এসএসডি) সন্তোষ পাণ্ডে জানিয়েছিলেন, মুন্নাকে সম্প্রতি অস্ত্র আইনে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। তা হলে মুন্নাকে ধরা যাচ্ছে না কেন?
পুলিশের একাংশের বক্তব্য, কসবা এলাকায় মুন্নার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। কিন্ত বছরখানেক আগে তিনি সোনারপুরে থাকতে শুরু করেন। মাঝে ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে মুন্না কসবা এলাকায় এলেও থাকতেন না। সোনারপুরে মুন্নার ঠিকানায় ইতিমধ্যেই খোঁজ করা হয়েছে। তবে তাঁর হদিস মেলেনি। বাকি অভিযুক্তেরাও ফেরার বলে পুলিশের দাবি।
তবে তদন্তে নেমে কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কসবায় চার-পাঁচটি বহুতল নির্মাণে ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ ও ঠিকা কাজের বরাত পেয়েছিলেন মুন্না। ক্রমশ এলাকায় নিজের প্রভাব বিস্তার করছিলেন তিনি। মুন্নার প্রভাব বাড়ছে দেখেই পাল্টা এলাকা দখলে নামে মনোজ ও তাঁর দল। এ নিয়ে প্রায়ই দু’পক্ষে গোলমাল বাধত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের একটি সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের আগে ধরপাকড়ের ফলে গোলমাল একটু কমেছিল। কিন্তু ভোট মিটতেই ফের মাথাচাড়া দেয় দু’পক্ষ। দিন কয়েক আগে মনোজের সহযোগীরা মুন্নার কয়েকটি নির্মাণস্থলে গিয়ে হামলা করে। পুলিশের ওই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই গোলমালের জেরে শুক্রবার রাতে মনোজ ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গী ভোগলুকে মারধর করে। সেই খবর পেয়ে ভোগলুর দলের লোকেরা ঘটনাস্থলে চলে আসে। মনোজের সঙ্গীরা পালালেও তিনি একা পড়ে যান। এর পরেই তাঁকে ভোগলুর দলবল মারধর করে বলে অভিযোগ। তবে তখন ঘটনাস্থলে মুন্না ছিলেন কি না, তা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পুলিশ।