মুখ্যমন্ত্রী ‘নরম’, তাই বহাল ট্যাক্সির দৌরাত্ম্য

রাতের শহরে ট্যাক্সিচালকদের যাত্রী প্রত্যাখ্যানের অধিকার দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, জরিমানার পরিমাণ এক ধাক্কায় কমিয়ে এনেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সেই নরম মনোভাবকে হাতিয়ার করেই শহরে ট্যাক্সিচালকেরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ। দোলের দিনে বাইপাসে মিটারে কারচুপি নিয়ে প্রশ্ন করাতেই সন্তান-সহ এক মহিলাকে ট্যাক্সি থেকে ঠেলে ফেলে দিয়ে টাকা ছিনতাই করে ট্যাক্সিচালক সুকুমার দত্ত।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৫ ০১:৪১
Share:

রাতের শহরে ট্যাক্সিচালকদের যাত্রী প্রত্যাখ্যানের অধিকার দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, জরিমানার পরিমাণ এক ধাক্কায় কমিয়ে এনেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সেই নরম মনোভাবকে হাতিয়ার করেই শহরে ট্যাক্সিচালকেরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ। দোলের দিনে বাইপাসে মিটারে কারচুপি নিয়ে প্রশ্ন করাতেই সন্তান-সহ এক মহিলাকে ট্যাক্সি থেকে ঠেলে ফেলে দিয়ে টাকা ছিনতাই করে ট্যাক্সিচালক সুকুমার দত্ত। এর জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি নজরুল মঞ্চে ট্যাক্সিচালকদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নরম কথাকেই দায়ী করছেন শহরের মানুষ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ট্যাক্সিতে রাজারহাট থেকে কসবায় যাচ্ছিলেন সন্তান-সহ এক মহিলা। মিটারে ভাড়া বেশি উঠছে দেখে তা নিয়ে চালককে প্রশ্ন করেন। চালক জানায়, গাড়ি আর যাবে না। মহিলা আপত্তি জানাতেই সে তাঁর কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিয়ে সন্তান-সহ তাঁকে ট্যাক্সি থেকে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ চালককে গ্রেফতার করে।

ট্যাক্সির যাত্রী প্রত্যাখ্যান কমাতে পদক্ষেপ করেন সারদা-কাণ্ডে বর্তমানে জেল বন্দি রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি যাত্রী প্রত্যাখানে জরিমানা ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করেন তিন হাজার টাকা। নো পার্কিং-এর জরিমানা আদায়ের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়তে থাকে। খোলা হয় একটি হেল্পলাইন নম্বর। এ সবের বিরুদ্ধে ট্যাক্সিচালকেরা একের পর এক ধর্মঘট শুরু করেন। গত অগস্টে পুলিশ গ্রেফতার করে ২২ জনকে।

Advertisement

কিন্তু সমস্ত প্রচেষ্টায় জল ঢেলে দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই চালকদের বাগে আনতে মদন মিত্রের করা পদক্ষেপগুলিকে নস্যাৎ করে দেন। জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে আনা হয় ১০০ টাকায়। এমনকী, রাতে ট্যাক্সি প্রত্যাখান করা যে চালকদের অধিকার সে কথাও বলেন তিনি। ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মত: “ছোটবেলা থেকেই আমি ট্যাক্সি চড়ছি। এটা নতুন কোনও ব্যাপার নয়। এগুলোকে আমি খুব বড় করে দেখি না।” এ ক্ষেত্রেও তাঁর ছোট করে দেখা ঘটনা যে বড় প্রভাব ফেলবে বৃহস্পতিবার কসবার ঘটনা থেকে তা পরিষ্কার বলেই মত সাধারণ মানুষের।

যদিও ভিন্ন সুর সিটুর ট্যাক্সিচালক ইউনিয়নের সম্পাদক প্রমোদ ঝা-র বক্তব্যে। তিনি বলেন, “এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কোনও সম্পর্ক নেই। কিছু চালক এখনও অসভ্যতা করেন। আমি চাই পুলিশ প্রশাসন তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি দিক।” তবে ট্যাক্সিচালকদের দৌরাত্ম্যের সঙ্গে রাজনীতির সংস্রব খুঁজে পেয়েছেন ট্যাক্সিমালিক সংগঠন বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল গুহ। তাঁর বক্তব্য, “শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি ট্যাক্সিচালকদের বিষয়ে জড়িয়ে পড়ায় এক শ্রেণির চালকরা এই সাহস পাচ্ছে। এই সমস্ত চালকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement