পুনর্বাসনে সমস্যা, নিউ মার্কেটে রয়ে গেল শুয়োরের খোঁয়াড়

পাঁচ বছরেও বদলালো না পরিচিত ছবি। এক দিকে সুসজ্জিত নিউ মার্কেট। অন্য দিকে, এর পাশে রয়েছে শুয়োরের খোঁয়াড়। মাঝে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ঠেকাতে এখান থেকে শুয়োর সরানো হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন যেতেই সেখানে ফিরে এসেছে শুয়োর।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১৯
Share:

অবাধ বিচরণ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

পাঁচ বছরেও বদলালো না পরিচিত ছবি।

Advertisement

এক দিকে সুসজ্জিত নিউ মার্কেট। অন্য দিকে, এর পাশে রয়েছে শুয়োরের খোঁয়াড়। মাঝে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ঠেকাতে এখান থেকে শুয়োর সরানো হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন যেতেই সেখানে ফিরে এসেছে শুয়োর। এর পাশের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাই দায়। বিভিন্ন সময়ে কলকাতা পুরসভা উদ্যোগী হলেও পুনর্বাসনের সমস্যায় খোঁয়াড় সরানো যায়নি।

কলকাতা পুরসভার হিডকো বিল্ডিং এর পাশেই রয়েছে পুরসভার সাফাই কর্মীদের কোয়ার্টার্স। পুরসভা সূত্রের খবর, বড় কোনও প্রকল্প করতে গেলে এই বাড়ি ভেঙে সেখানে প্রকল্পের কাজ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কর্মীদের পুনর্বাসন দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতা থাকায় সাফাইকর্মীদের অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করা যায়নি।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “এই উদ্যানের পাশেই ভ্যাট এবং পুরসভার সাফাইকর্মীদের বাসস্থান থাকায় সংস্কার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না। নিউ মার্কেট-সহ এই এলাকার সৌন্দর্যায়নের একটি প্রকল্প রয়েছে। তার মধ্যে এটিকেও অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু অর্থ বরাদ্দের সমস্যা রয়েছে।”

সুব্রত মুখোপাধ্যায় মেয়র থাকাকালীন এই জমিতে পুরসভার উদ্যান বিভাগ একটি উদ্যান তৈরি করেছিল। ফাঁকা জমি রেলিং দিয়ে ঘেরা হয়। ঢোকার জন্য পুরসভা একটি গেটও করেছিল। কিছু দিনের মধ্যেই উদ্যানটি নোংরা হয়ে যায়। পুর-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দারাই এটি নোংরা করেন।

পরবর্তী কালে, পুরসভা সিদ্ধান্ত নেয়, সামনে হিডকো বিল্ডিং এর জন্য এখানে একটি জলাধার তৈরি করা হবে। এই প্রকল্পের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। এর পরেও, এই ফাঁকা জমিতেই পুরসভা স্কুল তৈরিরও সিদ্ধান্ত নেন। সেটিও এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। পুরসভা সূত্রের খবর, জায়গাটি পরিষ্কার রাখতে একটি বহুতল বাজার তৈরি করা হবে এখানে। আপাতত সেই প্রকল্পেরও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

উদ্যান বিভাগ সূত্রে খবর, এখানে যে উদ্যান করা হয়েছিল তা রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এটি রক্ষণাবেক্ষণে যত সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষীর প্রয়োজন তা পুরসভার নেই।

সম্প্রতি, পুরসভা থেকে এই এলাকার সমীক্ষাও হয়ে গিয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নিউ মার্কেট চত্বরে যেখানে ফাঁকা জমি পাওয়া যাবে সেখানেই সৌন্দর্যায়ন হবে। নিউ মার্কেট সংলগ্ন এই জায়গাটিকেও সাজানো হবে। পাশাপাশি সাফাইকর্মীদের পুনর্বাসনের বিকল্প ব্যবস্থারও খোঁজ চলছে।

পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগেই জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ঠেকাতে এখান থেকে শুয়োর সরানো হয়েছিল। কিন্তু শহরে এই রোগের কোনও প্রাদুর্ভাব না হওয়ায় সেগুলি ছেড়ে দেওয়া হয়। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “এখান থেকে শুয়োর সরানো হয়েছিল। নতুন করে সেগুলি এসেছে। আবারও এখান থেকে শুয়োর সরানোর অভিযান করবে পুরসভা। এমনকী, শহরের অন্য জায়গা থেকেও শুয়োর সরাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।”

পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, অভিযান চালানোর ফলে সাময়িক ভাবে এখানে শুয়োর চড়া বন্ধ হয়। তার পর পরিস্থিতি যে-কে-সেই। তবে নজরদারির জন্য পুরসভার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। অন্য দিকে, এই খোলা ভ্যাট থাকায় এলাকা আবর্জনায় ভরে ওঠে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার বলেন, “এখানে আধুনিক ভ্যাট বা কম্প্যাক্টর বসানোর পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। এর জন্য ইতিমধ্যেই সমীক্ষা হয়ে গিয়েছে। কাজ চলছে। খোলা জায়গায় জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হলেই শুয়োরের উপদ্রব কমবে। আশা করছি এখান থেকে দ্রুত শুয়োর সরানো যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement