সচেতনতাও ফিরছে না, থামছে না দুর্ঘটনাও। সোমবার সকালে সল্টলেকের দু’নম্বর সেক্টরে কানে হেডফোন লাগিয়ে সাইকেল চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক সাইকেল-আরোহীর। মৃতের নাম অবধেশকুমার সিংহ (৪২)। আটক করা হয়েছে বাসটি। গ্রেফতার হয়েছেন চালক।
পুলিশ জানায়, এ দিন কেষ্টপুরের বাসিন্দা অবধেশ সাইকেলে সল্টলেকের করুণাময়ীর দিকে যাচ্ছিলেন। আট নম্বর আইল্যান্ডের কাছে একটি রিকশাকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটিকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। সে সময়ে উল্টোডাঙার দিক থেকে একটি বেসরকারি বাস এসে পিষে দিলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এ দিকে, আতঙ্কিত চালক তখন আরও বেপরোয়া ভাবে বাস চালাতে শুরু করেন বলে যাত্রীদের অভিযোগ। ৯ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে একটি দেওয়ালে ধাক্কা মেরে দাঁড়িয়ে যায় বাসটি। অভিযোগ, তখন কন্ডাক্টর ও চালক ভয়ে পেয়ে চম্পট দেন। বাসটি আটক করে পুলিশ। পরে অবশ্য বাসচালক সল্টলেক (পূর্ব) থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
এর পরেই ঘটনাস্থলে জড়ো হন পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তায় চলার সময়ে মোবাইল ব্যবহার নিয়ে নিষেধ কেউ শুনছেন না। পাশাপাশি, ওই রুটের অধিকাংশ বাসই বেপরোয়া ভাবে চলাচল করায় মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
এই নিয়ে সল্টলেকে তিন সপ্তাহে পরপর তিনটি দুর্ঘটনায় ১৩ জন আহত ও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা থেকে যান নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামো আগের থেকে উন্নত হলেও থেমে থাকছে না দুর্ঘটনা। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, আট নম্বর আইল্যান্ডে কোনও ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই। এ দিন ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার দাবি করেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বেশি যাত্রী তুলতে সল্টলেকে রোজ বাস ও অটোগুলি রেষারেষি করতে থাকে। বেপরোয়া ভাবে চলে গাড়ি বা শাট্ল গাড়িগুলিও। সল্টলেকের একটি বাস ইউনিয়নের নেতা মনোজ বাগুই বলেন, “বারংবার চালকদের সচেতন করা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। এর পরে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সল্টলেক কমিশনারেটের এডিসি (ট্রাফিক) নীলাঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “ট্রাফিক পরিকাঠামো বাড়ানোর পাশাপাশি সচেতনতার প্রসারেও কাজ হচ্ছে। তা সত্ত্বেও একাংশ সচেতন হচ্ছেন না। তবে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।” লোকসভা নির্বাচন মিটে গেলে ফের সচেতনতার প্রসারে পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে ট্রাফিক দফতর সূত্রে খবর।