সেই অর্ধসমাপ্ত সেতু। ছবি: শৌভিক দে।
কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৭-এ। এখনও শেষ হয়নি কেষ্টপুর-সল্টলেকের মধ্যে সংযোগকারী সেতুর কাজ। কেষ্টপুরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্ধার্থনগরে এই সেতু তৈরির কাজ শেষ হলে কেষ্টপুর, বাগুইআটি থেকে সল্টলেক এবং নিউটাউনের যাতায়াত ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে। চাপ কমবে ভিআইপি রোডেরও। সহজ হয়ে যাবে ইএম বাইপাসে যাওয়া।
কেষ্টপুর খালের উপরে এই সেতুর মাঝের অংশের কাজ হয়েছে। কেষ্টপুরের বর্ণপরিচয় সরণি দিয়ে কিছুটা এগলেই এই অর্ধসমাপ্ত সেতুটি নজরে পড়ে। ২০০৭-এ সেতুর কাজ শুরু হওয়ার সময়ে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল দু’বছরের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ হবে। কিন্তু কয়েক মাস পরেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফের কাজ শুরু হয় ২০১০-এ। তখন মাঝের অংশটি তৈরি হয়েছে। আবার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে আর কাজ শুরু হয়নি।
এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে গাড়ি নিয়ে কেষ্টপুর থেকে সল্টলেক যেতে ভিআইপি রোড ধরে উল্টোডাঙা হয়ে ঘুরপথে যেতে হবে না। সেক্টর ফাইভ যেতেও এই সেতু ব্যবহার করা যাবে। কেষ্টপুরের বাসিন্দা অসীম মজুমদার বলেন, “আমার ছেলে সল্টলেকের একটি স্কুলে পড়ে। তাকে স্কুলের গাড়ি উল্টোডাঙা দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে যায়। সময় লাগে আধ ঘণ্টারও বেশি। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে ১০ মিনিটও লাগবে না।”
পাশাপাশি সুবিধা হবে সল্টলেকের বাসিন্দাদেরও। সল্টলেকের করুণাময়ী এলাকার এক বাসিন্দা বিদিশা মজুমদার বলেন, “বিমানবন্দরে যেতে গেলে হয় উল্টোডাঙার হয়ে, নয় নিউটাউন হয়ে যেতে হয়। এই সেতু তৈরি হলে আরও একটি রাস্তা খুলে যাবে।”
কেন কাজ বন্ধ? গত দু’বছর ধরে এ নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছেন এই পুরসভার বিরোধী দল তৃণমূল। সম্প্রতি শেষ হওয়া বাজেট অধিবেশনেও অবিলম্বে কাজ শুরু করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিকাশ নস্কর বলেন, “গত বছর বাজেট অধিবেশনেই এই সেতু তৈরির টাকা অনুমোদন হয়ে গিয়েছিল। তার পরেও কাজ শুরু হল না কেন?” আর এক কাউন্সিলর তৃণমূলের মনীষ মুখোপাধ্যায় আর্থিক সমস্যা না মিটিয়ে সেতুর কাজ শুরু করার যৌক্তিকতাকে নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। এই সেতুর কাজ অবিলম্বে শুরু করার দাবিতে বিরোধীরা বোর্ড মিটিং বয়কট করেছেন। এ নিয়ে তাঁরা গণঅবস্থানেরও পরিকল্পনা করেছেন।
যদিও পুরসভা সূত্রে খবর, সেতুটির সংযোগকারী রাস্তার পরিকল্পনায় কিছু গলদ ছিল। তার সমাধান করা হয়েছে। তা ছাড়া আর্থিক সমস্যার জন্য কাজে দেরি হয়েছে। তবে এ বার সে সমস্যা মিটেছে। বিধাননগর পুরসভার পুর প্রধান কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “সেতুটি কেষ্টপুর খালের উপরে থাকায় সেচ দফতর এ বিষয়ে বলতে পারবে।” এ প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভা প্রথমে কাজটা শুরু করেছিল। খোঁজ নিয়ে দেখছি এই মুহূর্তে কী অবস্থা।”