এই দরজা কেটেই ঢুকেছিল চোর। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
বেশির ভাগ কর্মী নির্বাচনের কাজে বাইরে। অন্য দিকে, সারদা-কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত মামলাগুলি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সল্টলেকের পুলিশ। ফলে নজরদারি কার্যত কম। সেই সুযোগেই থানার উল্টো দিকে ঢিল-ছোড়া দূরত্বে একটি ফাঁকা বাড়িতে অনায়াসেই চুরি করে পালাল দুষ্কৃতীরা। সল্টলেক ফের দুষ্কৃতীদের ‘মুক্তাঞ্চল’ হয়ে উঠেছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
ঘটনাস্থল: বিধাননগর (পূর্ব) থানার অদূরে এ এল ব্লকের একটি বাড়ি। ওই একতলা বাড়ির গৃহকর্ত্রী সুমিতা দে জানালেন, গত আড়াই মাস ধরে তাঁর স্বামী দীপক দে-কে নিয়ে দক্ষিণ কলকাতায় মেয়ের বাড়িতে ছিলেন তিনি। সল্টলেকের এই বাড়িটি ওই সময়ে ফাঁকাই পড়ে ছিল।
বুধবার সকালে বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, মূল ফটক ভিতর থেকে বন্ধ। সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা বাড়ির পিছনে গিয়ে দেখেন গ্রিল কাটা। বিধাননগর পূর্ব থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা খুলে দেয় বলে জানান দীপকবাবু। সুমিতাদেবী জানান, একতলা বাড়ির প্রতিটি ঘর তছনছ করেছে দুষ্কৃতীরা। বাদ যায়নি রান্নাঘরও। বিভিন্ন ঘরের কাঠের ও স্টিলের আলমারির ১১টি তালা ভেঙে নিয়ে গিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও ৭০ হাজার টাকার গয়না।
বুধবার রাতে বিধাননগর পূর্ব থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই দম্পতি। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, থানার উল্টো দিকের বাড়িতেও নজর পড়ে না পুলিশের। বাকি এলাকায় কিছু ঘটলে তবে কে দেখবে? এর থেকেই বোঝা যায় সল্টলেকে এখন পুলিশি নজরদারির কী হাল।
সুমিতাদেবী বলেন, “আমরা কি এই পরিকল্পিত শহরেও কোনও নিরাপত্তা পাব না? উল্টো দিকেই থানা, তা সত্ত্বেও এমন ঘটে গেল।” তাঁরা জানান, রাতে পুলিশ তল্লাশিতে এসে বাড়ির পিছন থেকে রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করেছে। দুষ্কৃতীদের কেউ গ্রিল কাটতে গিয়ে আহত হয়েছিল বলে অনুমান তাঁদের।
রাত পর্যন্ত বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ চুরির কথা স্বীকার করলেও অভিযোগ দায়ের হওয়ার কথা স্বীকার করেনি। চুরির সমস্যা কয়েক মাস ধরে কমই ছিল সল্টলেকে। নির্বাচনের মুখে ফের চুরি হওয়ায় সল্টলেকবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠল। বিধাননগর পুলিশের একাংশের দাবি, অনেকেই নির্বাচনের কাজে বাইরে। বদলি হিসেবে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের এখনও এলাকা সড়গড় হয়নি। উপরন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলার কারণেও ব্যস্ত পুলিশের একাংশ। তাই কিছুটা নজরদারি শিথিল হয়েছে।
যদিও সরকারি ভাবে নিরাপত্তা নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগের কথা স্বীকার করেনি বিধাননগর পুলিশ। এক পুলিশকর্তা জানান, নজরদারি চলছেই। ইতিমধ্যে একাধিক অপরাধীকে ধরা হয়েছে, চুরিও কমেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।