তারের জটে বাতিস্তম্ভ। সেক্টর ফাইভে। ছবি: শৌভিক দে।
বাতিস্তম্ভ বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে ছুটে যান পুরকর্মীরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে মাথায় হাত কর্মীদের। কোনও দুর্ঘটনা নয়, বাতিস্তম্ভে জড়ানো তারের ভার সইতে না পেরে সিমেন্টের গাঁথনি ভেঙে হেলে পড়েছে।
নিছক একটি ঘটনা নয়, তারের জঙ্গলে ঢাকা সল্টলেকে এমন ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। তারের ভারে বাতিস্তম্ভ হেলে পড়লে পুরকর্মীরা গিয়ে মেরামত করেন। পিছিয়ে নেই তথ্যপ্রযুক্তি তালুকও। এখানেও বাতিস্তম্ভে অসংখ্য কেব্ল তার জড়ানো থাকে। ঝোলানো থাকে কেব্লের যন্ত্রপাতিও। সল্টলেক বা সেক্টর ফাইভ দু’ক্ষেত্রেই বাতিস্তম্ভের বৈদ্যুতিন খুঁটিতে কেব্ল লাগানোর অনুমতি দিয়ে বিধাননগর পুরসভা বা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকের প্রশাসনিক সংস্থা ‘নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি’র কোনও আয় হয় না বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। উল্টে বাতিস্তম্ভগুলি ঠিক রাখতে সংস্থাগুলির খরচ বেড়েছে। দীর্ঘ দিন এমন চলছে বলে অভিযোগ।
বাসিন্দা থেকে এই এলাকায় কর্মসূত্রে যাতায়াত করা মানুষরা জানান, এতে দৃশ্যদূষণের পাশাপাশি বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হচ্ছে। তাঁদের দাবি, কেব্লের জন্য বিদ্যুতের মতো মাটির নীচ দিয়ে পথের ব্যবস্থা করা হোক। বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “সল্টলেকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পুরসভা যথেষ্ট তৎপর হয়েছে। কিন্তু শহরের শ্রীবৃদ্ধির ক্ষেত্রে তারের জঙ্গল খুবই দৃষ্টিকটূূ। আবার কেব্ল এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় বিষয়। দু’দিকের স্বার্থ রক্ষা করে বিকল্প ভাবনার প্রয়োজন।”
কেব্ল পরিষেবা সরবরাহকারীদের একাংশের দাবি, বৈদ্যুতিন খুঁটি ছাড়া কেবল সরবরাহের জন্য বিকল্প কোনও পথ তাঁদের কাছে নেই। সে ক্ষেত্রে পরিষেবা ব্যাহত না করে প্রশাসন যদি বিকল্প ব্যবস্থা করে তবে তাঁরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই এই সমস্যা রয়েছে। বাতিস্তম্ভ ব্যবহার করা হচ্ছে, অথচ পুরসভার আয় বাড়ে না। পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নের ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এই তারের জঙ্গল। তবে এ বিষয়ে আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।”
অন্য দিকে নবদিগন্তের এক কর্তা জানান, অভিযোগ ঠিক। সমস্যা সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল। তবে তাঁর দাবি, পরিকল্পিত ভাবে পাঁচ নম্বর সেক্টর গড়ে ওঠেনি। তাই মাটির তলা ধরে বিশেষ পথের ব্যবস্থা করে কেব্ল সরবরাহের ব্যবস্থা এই সময়ে করা যাচ্ছে না। তবে পরীক্ষামূলক ভাবে বাতিস্তম্ভের বদলে কেব্ল পরিষেবা বজায় রাখতে অন্য ধরনের স্তম্ভ বসানো হয়েছে। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।”