ব্লকের কমিটি দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর গোলমালে রবিবার ভেস্তে গেল সল্টলেকের বিএল ব্লকের বার্ষিক সাধারণ সভা।
সল্টলেকের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ওই ব্লকের গত বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব ও আগামী বছরের কর্মসূচি ঠিক করাই ছিল সভার লক্ষ্য। কিন্তু ব্লকের বর্তমান কমিটির বদলাতে হবে, এই দাবিতে সভা শুরুর মুখেই ওই ব্লকের তৃণমূল নেত্রী শ্রগ্ধা চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক দল হুমকি দেয়। আবার বর্তমান ব্লক কমিটির যুক্তি দেয়, দু’বছর অন্তর ব্লক কমিটির নির্বাচন হয়। আগামী বছর নির্বাচন হলে তখনই নতুন কমিটি তৈরি সম্ভব। এ কথা শুনে ওই তৃণমূল নেত্রীর দলবল সভার চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের তর্কাতর্কিতে শেষমেশ সভা বাতিল হয়। আগামী ২৭ তারিখ ফের ওই সভা হবে।
শ্রগ্ধাদেবীর অভিযোগ, এই ব্লকে নির্বাচন বলে কিছু হয় না। তাই অনাস্থা আনতে চেয়েছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু মাত্র পাঁচ দিন আগে নোটিস দেওয়ার ফলে বাসিন্দারা সকলে তা জানতে পারেননি। ফলে, অনাস্থা আনা যায়নি বলে তাঁর অভিযোগ। প্রয়োজনীয় সদস্য হাজির না-থাকায় সভা বাতিল হয়েছে বলে তাঁর দাবি। শ্রগ্ধাদেবীর দাবিকে নস্যাৎ করে ব্লক কমিটির পাল্টা অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরে নানা মহল থেকে কমিটি বদলের জন্য চাপ আসছিল। এমনকী, ২৩ জনের একটি প্যানেল তৈরি করে সেখান থেকে কমিটি তৈরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু অপেক্ষা করা হচ্ছিল আগামী বছরের ভোটের পরে নতুন কমিটি গঠনের জন্য।
শেষ পুরসভা ভোটে জয়ী হয়েছিল সিপিএম। তখন তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন শ্রগ্ধাদেবী। লোকসভা ভোটেও সল্টলেকে বিজেপি-র কাছে ওই এলাকায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। পুরসভার নিরিখে প্রায় ১৮টি ওয়ার্ডে জিতেছে বিজেপি। বিএল ব্লকের ফল তেমনই। আগামী বছর সল্টলেকের পুরভোটের আগে এলাকার ব্লক কমিটিগুলি দখলে রাখতেই তৃণমূলের একাংশ এই কাণ্ড করছে বলে বাসিন্দাদের ধারণা।
সদস্য না হয়েও কী ভাবে শ্রগ্ধাদেবী ওই সভায় গিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। যদিও শ্রগ্ধাদেবীর দাবি, তাঁর মা ওই কমিটির সদস্য। মা অসুস্থ হওয়ায় তাঁর অনুমতিক্রমেই তিনি সভায় যান। শ্রগ্ধাদেবীর দাবি অস্বীকার করেছেন ব্লক কমিটির একাংশ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর শাশ্বতী মণ্ডল বলেন, “নিয়ম মেনেই নির্বাচন হয়েছিল। যারা এ সব বলছেন, তাঁরা তখন নির্বাচনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি!”
এই গোলমালে তৃণমূল নেত্রীর জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় শাসক দল যুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন সল্টলেকের তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসু। একই সুরে সল্টলেক টাউন তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বলেন, “যে বা যাঁরা এমন করেছেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। সেখানে দলকে জড়ানো ঠিক নয়।”