ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো

জট কাটাতে খোদ বিচারপতি বসবেন সব পক্ষকে নিয়ে

এত দিনে সম্ভবত জট কাটতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের। কারণ, এ বার খোদ বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত আগামী ১০ জুলাই হাইকোর্টে তাঁর চেম্বারে বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এর আগে একই পদ্ধতিতে বিচারপতি দত্তের চেম্বারে আলোচনার মাধ্যমে পরমা আইল্যান্ড উড়ালপুল নিয়ে দীর্ঘ দিনের জট কেটে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৪ ০৩:২২
Share:

এত দিনে সম্ভবত জট কাটতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের। কারণ, এ বার খোদ বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত আগামী ১০ জুলাই হাইকোর্টে তাঁর চেম্বারে বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এর আগে একই পদ্ধতিতে বিচারপতি দত্তের চেম্বারে আলোচনার মাধ্যমে পরমা আইল্যান্ড উড়ালপুল নিয়ে দীর্ঘ দিনের জট কেটে গিয়েছিল।

Advertisement

শুক্রবার বিচারপতি জানান, ইতিমধ্যেই সব পক্ষ নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছে। তা সত্ত্বেও কয়েকটি ক্ষেত্রে জটিলতা রয়ে গিয়েছে। সেই জট কাটাতেই ১০ জুলাইয়ের বৈঠক হবে। কারণ বিচারপতি মনে করেন, আলোচনা করেই প্রকল্পের জটিলতা দ্রুত মেটাতে হবে। তা না হলে ওই প্রকল্পের খরচ দিনে দিনে আরও বেড়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন মেট্রো প্রকল্পের জট কাটাতে সব পক্ষ একসঙ্গে আলোচনায় বসেছিল। সেই আলোচনায় দ্রুত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকগুলি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও কতগুলি ক্ষেত্রে জট ছাড়ানো সম্ভব হয়নি। প্রকল্পের নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সংস্থার বক্তব্য ছিল, হাওড়া ময়দান, হাওড়া স্টেশন এবং মহাকরণ ও ব্রেবোর্ন রোডএই এলাকাগুলিতে বেশ কিছু সমস্যা থাকার কারণে হাওড়ার দিকের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। নির্মাণ সংস্থাটির মনে হয়েছিল, রাজ্য সরকার যতটা সক্রিয় হলে এই সমস্যা মিটতে পারে, সরকার ততটা সক্রিয় নয়।

Advertisement

জুন মাসের বৈঠকে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা ব্রেবোর্ন রোড পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চান। তার জন্য ব্রেবোর্ন রোডের কিছু অংশ বন্ধ রাখতে হবে এবং ২১ নম্বর ব্রেবোর্ন রোডের পেট্রোল পাম্পটিকে উচ্ছেদ করে পুনর্বাসন দিতে হবে। ওই পেট্রোল পাম্পটি রাজ্য সরকারের কাছে রাজারহাটে পুনর্বাসনের জমি চেয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে ওই বৈঠকে জানানো হয়, কলকাতা পুলিশ, পরিবহণ ও নগরোন্নয়ন দফতর আলোচনার পরেই সরকার কয়েক দিনের মধ্যে মেট্রো-কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে।

এ দিন ওই মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের পক্ষে জি পি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রকল্পের সমস্যা নিয়ে সরকার যথেষ্ট ওয়াকিবহাল, তারা চেষ্টাও করছে। তবে জট কাটাতে কিছু সময় লাগবে। বিচারপতি জানান, তিনি মনে করেন, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নকশার কিছু কিছু পরিবর্তন করার আগে ওই পরিবর্তন কতটা কাজের পক্ষে সহায়ক হবে, তা ভাবা উচিত ছিল। বিচারপতি এই মামলার সঙ্গে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনকেও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ১০ জুলাইয়ের বৈঠকে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকবেন।

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, জনস্বার্থে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের আটকে যাওয়া কাজ শেষ করতে আলোচনায় বসুক সব পক্ষ। আদালতের নির্দেশ মেনে ১২ জুন মেট্রো রেল-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল রাজ্য সরকার। সেখানে মেট্রো রেল-কর্তৃপক্ষ জানান, গঙ্গার তলদেশ দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজটি তাঁরা শীঘ্রই শুরু করতে চান। উল্লেখ্য, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত বিস্তৃত ওই প্রকল্পের কাজ মাঝপথে আটকে গিয়েছে অর্থ এবং জমি-জটে।

সল্টলেক থেকে শুরু করে শিয়ালদহ অবধি প্রকল্পের কাজ ৬০ শতাংশ এগিয়েছে। অর্থ-সঙ্কট এবং জমি-জটের পাশাপাশি সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশন, মহাকরণ এবং ব্রেবোর্ন রোডের ক্ষেত্রে ওই প্রকল্পের গতিপথ কী হবে, তা নিয়েও মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। সেই জন্যই বিচারপতি সব পক্ষকে ডেকে সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হয়েছেন।

রাজ্য সরকারের বক্তব্য, সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশন থেকে ধর্মতলা, মহাকরণ হয়ে হাওড়া যাক ওই প্রকল্প। কিন্তু মেট্রো রেলের ওই প্রকল্পের মূল গতিপথ ছিল সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশন থেকে ব্রেবোর্ন রোড হয়ে হাওড়া। মেট্রোর বক্তব্য, ধর্মতলা-মহাকরণ দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প নিয়ে গেলে অনেকটা বাড়তি খরচ হবে। ওই বাড়তি অর্থ ব্যয়ে নারাজ মেট্রো। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে তা পৌঁছয় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement