তাদের দাবির ফলে কার্যত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পটাই ভেস্তে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে বুঝে তড়িঘড়ি পিছু হটল রাজ্য সরকার। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ব্যাখ্যা, জমির দাম বাবদ চার হাজার কোটি টাকা আসলে কেন্দ্রের কাছে চাওয়া হয়নি, এর মাধ্যমে নিজেদের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। তাঁর দাবি, “রাজ্য সরকার জমির মূল্যের একটি চিঠি দিয়েছে। রেল বারবার বলছে, রাজ্য সরকার কিছুই করছে না। আমরা প্রকল্পের জন্য কত টাকার জমি দিয়েছি, সেটা বাংলার মানুষের জানার অধিকার আছে। জমির মূল্য আমরা জানাব না! তবে এ জন্য উন্নয়নমূলক প্রকল্প আটকে থাকবে না।”
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে জমির দাম বাবদ রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে চার হাজার কোটি টাকা দাবি করেছে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরে রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করতে শুরু করেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতারা। এ দিনই বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য সরকারের আর্থিক দাবির ফলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের বাস্তবায়ন যে অনিশ্চিত হয়ে গেল, তা দুগ্ধপোষ্য শিশুও বুঝতে পারবে। কিন্তু কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা আর মানুষ শুনবে না। কীসের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার এই দাবি করছে, তা তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানাতে হবে।” শমীকবাবুর আরও বক্তব্য, “কেন্দ্র অসহযোগিতা করে থাকলে রাজ্য সর্বদল বৈঠক ডাকুক। সে ক্ষেত্রে আমরাও তাতে সায় দেব। উন্নয়নের ব্যাপারে আমরা কোনও বিভাজন চাই না।”
বিরোধীদের আক্রমণের মুখে রাজ্য সরকার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ময়দানে নামে। রাজ্যের মন্ত্রী-আমলারা বলতে শুরু করেন, কেন্দ্রের কাছে আদৌ জমির দাম চাওয়া হয়নি, এই মেট্রো প্রকল্পে যে রাজ্যেরও কেন্দ্রের সমান অবদান রয়েছে, শুধুমাত্র সেটাই বোঝানো হয়েছে। সেই সুরেই এ দিন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, “রেল আমাদের এক পয়সাও ছাড়ছে না। অথচ, বলা হচ্ছে, মেট্রো প্রকল্পগুলিতে নাকি রাজ্যের কোনও অংশীদারিই নেই। কিন্তু আসলে ওই সব প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার যে কত মূল্যের জমি ছেড়ে দিয়েছে, তা রাজ্যের মানুষের জানার অধিকার আছে। আমরা সেটাই জানিয়েছি।”