কলকাতার কড়চা

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০০:০০
Share:

ইতালির অভিজ্ঞতা

Advertisement

ইতালির অভিনেতা-অভিনেত্রী বা কলাকুশলীদের অনেকেই হয়তো ততটা সড়গড় নন ইংরেজিতে, তাতে অসুবিধে হচ্ছিল না, যেটা চাইছিলাম ওঁদের কাছ থেকে সেটা ওঁরা অধ্যবসায়ের সঙ্গে করে দেখাচ্ছিলেন। থিয়েটারের নিজস্ব ভাষা আছে, সেখানে দু’দেশের তফাতটা বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। সম্প্রতি ইতালিতে তাঁর পরিচালনায় ‘ইফিগেনিয়া মিটস ইলেকট্রা’ নাটকটির অভিজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন কলকাতার নতুন প্রজন্মের প্রতিভাময়ী পরিচালক অবন্তী চক্রবর্তী। হোমারের ইলিয়াড অবলম্বনে ৪৫ মিনিটের এই অভিনয় হল সেখানকার অ্যাকাদেমিয়া দেলার্তে ও স্পাজিয়ো সেমে-র উদ্যোগে, ৫ এপ্রিল। ইতালির শিল্পীরা ছাড়াও আমেরিকার ক’জন শিল্পীও ছিলেন এতে।

তাঁদেরই একজন ইলিওনোরা (ডান দিকের ছবিতে), আর ভারতীয় বলতে কলকাতার মঞ্চাভিনেত্রী তূর্ণা দাস (বাঁ দিকের ছবিতে, অন্য নাট্যকর্মীদের সঙ্গে)। ‘পারফরম্যান্স-এ কমিউনিটি অ্যাক্টিভিটি-র ওপর জোর দিয়েছিলাম, আধুনিক থিয়েটারের তো সেটাই অভিপ্রায়, ফলে কলকাতা থেকে ওখানে গিয়ে টানা পনেরো দিন ধরে রিহার্সালে নানা ধরনের ইম্প্রোভাইজেশন ও রিচুয়াল করাতাম অভিনেতাদের, যেটা মূল মঞ্চাভিনয়ের সময় নতুন নতুন মাত্রা যোগ করত,’ বলছিলেন অবন্তী। কয়েকটি চরিত্রে, যেমন ইফিগেনিয়া ও ইলেকট্রা, দু’জন করে অভিনয় করেছেন, তাদের পিতা অ্যাগামেমনন-এর চরিত্রে তিন জন। ‘আসলে এক-একটা মানুষের মধ্যে অনেকগুলো সত্তা বাস করে, তাই একটা চরিত্রকে দুই বা তিন জন অভিনেতায় ভেঙে দিয়েছিলাম যাতে ড্রামাটিক কনফ্লিক্ট আরও তীব্র হয়। সেই সঙ্গে প্রত্যেক অভিনেতাকেই শরীরের ভিতর দিয়ে তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করতে বলেছিলাম, কেবলমাত্র সংলাপে আটকে না থেকে।’ ইতালিতে এই প্রযোজনাটি যথেষ্ট সাড়া ফেলার পর এর পাল্টা প্রযোজনাটি হবে এ বারের শীতে কলকাতায়, তখন ইতালির ওই নাট্যদলটির শিল্পীরা এখানে আসবেন, অবন্তীর পরিচালনায় পরবর্তী প্রযোজনাটি করতে। এ ছাড়াও কলকাতার শিল্পীদের নিয়ে এ শহরেই ইলিয়াড অবলম্বনে ‘ট্রয়’ (প্রযোজনা: নোবেল অ্যাসোসিয়েট) পরিচালনা করতে চলেছেন অবন্তী, ‘তাতে ইতালির মঞ্চপ্রযোজনার ভিডিয়োগ্রাফি ব্যবহার করব।’

Advertisement

সাক্ষাত্‌

বাইরে মাঝেমধ্যে দেখা হলেও বাড়িতে তাঁরা মুখোমুখি হননি বছর ছ’সাত। রবিবার দুপুরে মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায় এলেন নাটক দেখার নেমন্তন্ন করতে। নাটকের নাম ‘সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়’ (বেলঘরিয়া হাতেখড়ি, নির্দেশক দেবাশিস ঘোষ দস্তিদার)। নাটকে সুনীল-শক্তি দু’জনেই আছেন, সুনীলের স্ত্রী স্বাতী-র সংলাপ না থাকলেও উপস্থিতি থাকছে মঞ্চে। নাটকের তৃতীয় অভিনয় ৫ মে রবীন্দ্র সদনে। এ সব নিয়েই স্বাতী আর মীনাক্ষীর কথা হল মিনিট চল্লিশ, তারই ফাঁকে সঙ্গের ছবিটি তুলেছেন শুভাশিস ভট্টাচার্য।

সাফল্য

“গুজরাতে কারিগরি উন্নয়নের কথা যেমনটা শোনা যায়, তাতে ভাবিনি যে আমাদের ছেলেমেয়েরা ওদের সঙ্গে পেরে উঠবে। অথচ ওরাই আমাদের কাছে দাঁড়াতে পারল না।” জানালেন পশ্চিমবঙ্গ কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দফতরের অধিকর্তা হরিপ্রসন্ন দে। ভারতের সব আইটিআই থেকে পাশ করা প্রথম সারির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে প্রতি বছর অল ইন্ডিয়া স্কিল কম্পিটিশন আয়োজন করে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক। আগে এ রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা ব্যক্তিগত ভাবে পুরস্কৃত হলেও রাজ্য হিসেবে শীর্ষ স্থান এই প্রথম। প্রায় পঞ্চাশ জনের চেষ্টায় পশ্চিমবঙ্গ প্রথম (৩১৩৫ পয়েন্ট), মধ্যপ্রদেশ দ্বিতীয় (১৯০৯), তামিলনাড়ু তৃতীয় (১৭৯০) হয়েছে। বেসরকারি ভাবে বাঙালি কারিগরদের কর্মদক্ষতা কদর পেয়েছে নানা ভাবে, এ বার তা সরকারি স্বীকৃতি পেল। ৩০ এপ্রিল দিল্লিতে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

মনের কথা

মানসিক অসুস্থতা এই পরিচয়টুকুই ভবিষ্যত্‌ অন্ধকার করে দিতে পারে। ঠিকানা তখন মানসিক হাসপাতাল। ন্যাড়া করে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা, লাঠির ঘা ইত্যাদি বরাদ্দ। ওঁরা তখন আর মানুষের পর্যায়ে পড়েন না যে। দিল্লিতে আইএএস অফিসারের মেয়ে ঝিলমিলকে মানসিক রোগীর তকমা দিয়েছিল পরিজনরাই। হাসপাতালে ঘুমের ওষুধ ইনজেকশন দিয়ে ফেলে রাখা হত।

তবে উপযুক্ত কাউন্সেলিং আর প্রশিক্ষণ পেলে ওঁরাও মূল স্রোতে ফিরতে পারেন। লুম্বিনি পার্ক থেকে যেমন ফিরেছেন গোলাপ, জয়ন্তী, বা রেনু। গোলাপ জরির কাজ করে জীবনে দাঁড়াতে চান, জয়ন্তী চান কাজ করে মেয়েকে পড়াতে। এ ক্ষেত্রেও মেয়েরাই বেশি অত্যাচারিত, তাই চার কন্যার জীবন নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেছে মানসিক রোগীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে চলা স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘অঞ্জলি’। সংস্থার তরফে রত্নাবলী রায় জানালেন, সরকারি নীতি যাতে পরিবর্তিত হয়, সে জন্যই ছবিটি করা। ৩০ এপ্রিল বিকেল পাঁচটায় রোটারি সদনে ‘অঞ্জলি’ ও ‘স্বয়ম’-এর যৌথ উদ্যোগে দেখানো হবে ‘কাম উইথ মি’।

লেখকের কাছাকাছি

‘একদিন আশাপূর্ণা দেবী রাতে আমায় ফোন করলেন, ভানু, তোমার মেসোমশাই ও আমি কাল দুপুর বারোটার ট্রেনে শ্বশুরবাড়ি যাব। তুমি কষ্ট করে দুটো বই কৃষ্ণনগরের ট্রেনে পৌঁছে দেবে?” বই দিতে গিয়েই ‘কথাসাহিত্য’ পত্রিকার জন্য ধারাবাহিকের আবদার, “মাসীমা হেসে বললেন, ... সামনের মাস থেকে দেব। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি”। নাম? “ওই ‘প্রতিশ্রুতি’ই দাও না, বরং ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ দাও,...।” প্রথম প্রতিশ্রুতি-র সূচনা এই ভাবেই। প্রকাশক জীবনে বহু বিশিষ্ট জনকে পেয়েছেন সবিতেন্দ্রনাথ রায়। সেই সুবাদে রাজশেখর বসু, শরত্‌চন্দ্র পণ্ডিত, শিবরাম, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, নীরদচন্দ্র চৌধুরী, আশাপূর্ণা দেবী, সৈয়দ মুজতবা আলি, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো ১৮ জনের নানা জানা-অজানা কাহিনি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখকের কাছাকাছি (দীপশিখা প্রকাশন)।

অন্তরঙ্গ

‘বাবুকাকার রুদ্রমূর্তি। রাগে ঠকঠক করে কাঁপছেন আর চিত্‌কার করছেন কিছুতেই ভাত খাবেন না তিনি। শেষপর্যন্ত জানা গেল, বাবুকাকার প্রিয় একটি তরকারি সেদিন কী কারণে যেন রান্না করা সম্ভব হয়নি।’ কাকা কৃষ্ণচন্দ্র দে-কে নিয়ে একটি দীর্ঘ লেখা লিখেছিলেন মান্না দে, ‘দেশ’ বিনোদন ১৩৭৮ সংখ্যায়। সেই সুরের সূর্য কৃষ্ণচন্দ্র (সপ্তর্ষি) এ বার সটীক হয়ে প্রকাশিত হল মান্না দে-র মৃত্যুর পরের প্রথম জন্মদিনের ঠিক আগে। দুর্লভ ছবি, কৃষ্ণচন্দ্র দে-র জীবনপঞ্জি, অভিনয় ও সংগীত পরিচালনার তালিকা, রেকর্ড তালিকা-সহ বইটি সম্পাদনা করেছেন অভীক চট্টোপাধ্যায় ও অশোক ভট্টাচার্য। এ দিকে, ন’ বছর ধরে সক্রিয় ‘মান্না দে সঙ্গীত অ্যাকাডেমি’।

মান্না দে-র জন্মদিন উপলক্ষে এবং অ্যাকাডেমির নবম বর্ষপূর্তিতে তাদের সংগ্রহ থেকে মান্না দে-র কিছু দুর্লভ ছবির প্রদর্শনী ১ মে পর্যন্ত গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায়। থাকছে গানের অনুষ্ঠানও, ১ মে সন্ধ্যা ৬টায় উত্তম মঞ্চে। প্রধান শিল্পী মান্না দে-র স্নেহধন্য মুম্বইয়ের সূর্য ভট্টাচার্য। সঙ্গের ছবিতে কাকার সঙ্গে মান্না দে, প্রদর্শনী থেকে। অন্য দিকে প্রেমাস্পদের জন্য চিত্রাঙ্গদা হয়েছিলেন সুরূপা আর চণ্ডালিকা বিছিয়ে ছিলেন মায়াজাল। পরে দু’জনেই হয়ে ওঠেন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নারী। ওঁদের আত্মোপলব্ধির কথা তুলে ধরতে ‘চিত্রাঙ্গদা’ ও ‘চণ্ডালিকা’ অবলম্বনে সব্যসাচী দেবের রচনায় ‘আপনাকে এই জানা আমার’ গীতিআলেখ্য ৩ মে সন্ধে ছটায় কলাকুঞ্জে। ভাষ্য ও পাঠে সব্যসাচী দেব ও পৃথা চট্টোপাধ্যায়। আয়োজনে আর্টওয়াইজ।

মুখোমুখি

‘একেবারেই সতর্ক হয়ে লেখাগুলো লিখিনি।... কখন কোন ফাঁকে বুকের মধ্যে এসে জোটে জন্মান্তরের ক্রোধ, লোভ, ঘৃণা, মাত্‌সর্য। তখন মানুষ সত্য কথা বলে নিজের সম্বন্ধেও, পরের সম্বন্ধেও। তখন মুখোশ থাকে না, থাকে না ভদ্রতার আবরণ, যা দেখে খারাপ লাগে, সেটা সরাসরি বলে ফেলতে লজ্জা পাই না এই সময়। ব্যাপারটা অনেকটাই জীবন-মন্থন-বিষের মতো।’ লিখেছেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী তাঁর অসদুক্তি-হলাহল-এর শুরুতেই। ‘অহর্নিশ’ পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশিত সে রচনাই এ বার গ্রন্থাকারে (দি সী বুক এজেন্সি)। ৩ মে সাড়ে ৫টায় জীবনানন্দ সভাঘরে অহর্নিশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে নচিকেতা চক্রবর্তী সুরে ও ছন্দে বইটি উদ্বোধন করবেন, সঙ্গে লেখক-জীবনের কথা শোনাবেন নৃসিংহপ্রসাদ। পরের পর্বে পাঠকের মুখোমুখি কবি আবীর সিংহ, প্রাবন্ধিক বিশ্বজিত্‌ রায়, কথাকার তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুক্তমনা

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়। এখনকার মানুষজনের কাছে ‘খোকনদা’। ১৯৬০ দশকের শেষ দিকে সি ই এস সি-র চাকরি ছেড়ে বীরভূমের গ্রামে চলে যান কৃষক আন্দোলনে। তখনকার প্রচলিত ধারার বাইরে, বামপন্থী আন্দোলন গড়ে তুলতে অল ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটি ফর কমিউনিস্ট রেভলিউশনারি-র প্রথম সারির কর্মী। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, সাঁওতাল পরগনা আঞ্চলিক কমিটির সক্রিয় সদস্য। ১৯৭০ দশকের বিভিন্ন সময়ে দুমকায় খেতমজুর আন্দোলন, পাণ্ডবেশ্বরের খনি এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক। গ্রামের আন্দোলন থেকে শহরের আন্দোলনে, অধিকার আন্দোলনে। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি, এপিডিআর প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা। কলকাতার নানা রাজনীতিক ও সামাজিক আন্দোলন, সংগঠনে জড়িয়ে থাকা, জুনিয়র ডক্টর্স মুভমেন্ট, সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী মঞ্চ, বিজ্ঞান আন্দোলন। রাজনীতিক ও সামাজিক বিষয়ে বই ছাপার জন্য ‘মুক্তমন’ প্রকাশনা তৈরি। সাধারণের প্রয়োজনে সাহায্য করা, পাশে থাকা। চলে গেলেন ১৮ এপ্রিল। স্মরণসভা ২ মে বিকেল ৫টায়, স্টুডেন্টস হল-এ।

উদ্‌যাপন

‘এ রকম ছবি খুব কমই হয়েছে, যেটাতে প্রত্যেকটা চরিত্র অত্যন্ত সুঅভিনীত।’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘অভিযান’ সম্পর্কে। সৌমিত্রকে যেমন নতুন ভাবে পাওয়া গিয়েছিল, তেমনই ওয়াহিদা, রুমা, জ্ঞানেশ, রবি, শেখর ও চারুপ্রকাশ ঘোষের মনে রাখার মতো অভিনয়। ২ মে সত্যজিত্‌ রায়ের (১৯২১-’৯২) জন্মদিনে নন্দনে উদ্‌যাপন শুরু হবে ‘অভিযান’ দেখিয়ে। ‘৩ ও ৪ মে দেখাব মহাপুরুষ, সদ্‌গতি, জয় বাবা ফেলুনাথ তুলনায় কম দেখানো ছবিগুলো, যার কোয়ালিটি এখনও ঝকঝকে। সঙ্গে সত্যজিত্‌কে নিয়ে বিদেশিদের তোলা দুটি তথ্যচিত্র’, জানালেন অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। তবে মূল আকর্ষণ ৪ মে বিকেল সাড়ে ৫টায় ‘চারুলতা’ (১৯৬৪-র ১৭ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছিল)। ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ছবির আগে আলোচনায় সন্দীপ রায়, সূর্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও রুশতী সেন।

অন্য পথে

আধুনিক এবং অন্য কিছু গান গাইলেও রবীন্দ্রসঙ্গীতেই মূলত পরিচিত তিনি। কিন্তু এ বার একটু অন্য পথে হাঁটলেন ইন্দ্রাণী সেন। আর সেটাও পঁচিশে বৈশাখের কিছু দিন আগে। এখন যখন রবীন্দ্রসঙ্গীতের সিডি প্রকাশের ঢল নেমেছে, তখনই ইন্দ্রাণী সরে গেলেন রবীন্দ্রনাথ থেকে। বাংলা গানের কম আলোচিত কিছু গান রেকর্ড করলেন। তালিকায় আছেন রামপ্রসাদ সেন, নিধুবাবু, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও স্বামী বিবেকানন্দ। বেশ ক’টি গান এখন প্রায় বিস্মৃতির অন্তরালে। যেমন বঙ্কিমচন্দ্রের ‘মথুরাবাসিনী মধুর হাসিনী’, ‘সাধের তরণী আমার’, মধুসূদনের ‘এখন কি আর নাগর’, ‘যেও না রজনী’। মোট আটটি গানের এই অ্যালবাম ‘অর্ঘ্য’ প্রকাশ করেছে পিকাসো। বাংলা গানের হারিয়ে যেতে বসা ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য কাজ, সন্দেহ নেই। কিন্তু কেন এমন দুর্লভ গান বাছলেন? ‘‘এক সময় দূরদর্শনে ‘যে দিন গেছে চলে’ বলে একটি অনুষ্ঠান হত বিমান মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায়। আমি সেখানে বিমানবাবুর ছাত্রী হিসেবে তুলেছিলাম গানগুলো। বহু দুর্লভ প্রায় না-শোনা গান শেখার সৌভাগ্য হয়েছিল তখন। বিমানবাবুর ইচ্ছে ছিল এর একটা অ্যালবাম হোক। সেই ইচ্ছেটাকে মর্যাদা দিয়ে অ্যালবামটা করলাম। আরও বেশ কিছু গান তোলা আছে। পরে সেগুলিও রেকর্ড করার ইচ্ছে আছে,’ বলছেন ইন্দ্রাণী।

কবি-গবেষক

শত্রুরা যাই বলুক কিংবা বন্ধুরা যাই ভাবুন, আমার আরও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশিত হতে পারে।’ স্বভাবসিদ্ধ সরসতায় এমন কথা বলেছিলেন ইন্দ্রমিত্র। ঠিক করে বললে অবশ্য এ কথা ইন্দ্রমিত্রের নয়, অরবিন্দ গুহের। কারণ, কবিতা যিনি লেখেন তিনি অরবিন্দ গুহ, সরস গবেষণায় যিনি ডুবে থাকেন তিনি ইন্দ্রমিত্র। ১৯৫৪-’৮০, এই পর্বে তাঁর কবিতার বইয়ের সংখ্যা মাত্র তিন। ব্যতিক্রম তাঁর গবেষক সত্তাও-- সরসতা, তথ্যের নিপুণতায়। করুণাসাগর বিদ্যাসাগর, সাজঘর বা ইতিহাসে আনন্দবাজার-এর গবেষক একটি তথ্য নিখুঁত জানার জন্য অপেক্ষা করতে পারেন বছরের পর বছর। তার উপর, ছিলেন জীবনানন্দ দাশ। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত নৈকট্য থাকা সত্ত্বেও অরবিন্দ গুহের কবিতায় কখনও ছায়া পড়েনি জীবনানন্দের। ১৯৪৭-এ কলকাতায় বি এ পড়তে এসেছিলেন ইন্দ্রমিত্র, পরিজনদের নিয়ে আসেন বরিশালের ১৯৫০-এর দাঙ্গার পরে। তখন সবে বাইশ বছর বয়স তাঁর। তবু কৃচ্ছ্রক্লিষ্ট তরুণ বয়সেও এ শহরকে উন্মুখ হয়ে গ্রহণ করেছিলেন এই প্রখ্যাত গবেষক, স্বল্পবাক কবি। তারুণ্যের স্বপ্ন আর হতাশা নিয়ে লেখেন উপন্যাস আপনজন-ও, পরে যা নিয়ে সিনেমা করেন তপন সিংহ। ‘কালপ্রতিমা’ সাহিত্যপত্র (সম্পা: নলিনীকুমার চক্রবর্তী) প্রকাশ করেছে অরবিন্দ গুহ (ইন্দ্রমিত্র) সম্মাননা বিশেষ সংখ্যা। লিখেছেন অশোক মিত্র, শঙ্খ ঘোষ, জ্যোতির্ময়ী গুহ, দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছে তাঁর কবিতা, শিশিরকুমার ভাদুড়ীকে নিয়ে রচনা, সাক্ষাত্‌কার, গ্রন্থপঞ্জি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement