মুখ্যমন্ত্রী বাগুইআটি উড়ালপুল উদ্বোধন করার পর সেটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। রবিবার।—নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের যৌথ প্রকল্পেও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে রাজ্য। সঠিক সময়ে টাকা তো আসছেই না। উল্টে সেই প্রকল্পের খরচ বাড়লে, কেন্দ্র সেই বাড়তি টাকা দিচ্ছে না। রাজ্যের ঘাড়ে ঋণের বোঝা থাকা সত্ত্বেও সেই বাড়তি খরচ রাজ্যকেই দিতে হচ্ছে। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে এই কথা বলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বাগুইআটি উড়ালপুলের উদ্বোধন করতে এসে কথাগুলি বলেন তিনি।
এ দিন তিনি দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতা সত্ত্বেও রাজ্য কিন্তু উন্নয়নের স্বার্থে কাজ আটকে রাখছে না। লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়েই উন্নয়নের জন্য টাকা খরচ করে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজারহাট, নিউ টাউন, বাগুইআটি, এয়ারপোর্ট এলাকায় এলে বোঝা যায় গত সাড়ে তিন বছরে এই এলাকাগুলির সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। বাগুইআটি উড়ালপুল সেই উন্নয়নে নতুন সংযোজন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সৌগত রায় জানান, উড়ালপুল তৈরির সময় প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল ২০৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জেএনএনইউআরএম দিয়েছে ৭০ কোটি আর বাকি ১৩৬ কোটি রাজ্য দিয়েছিল। কিন্তু ওই প্রকল্পে খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৩১৩ কোটি টাকায়। এই বাড়তি টাকা রাজ্যকেই দিতে হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, এই উড়ালপুলের ফলে এলাকার যানজটের সমস্যা মিটবে। এ দিকে উদ্বোধনের পরেই দেখা গেল, বেশ কিছু বিষয় মাথায় না রেখেই উড়ালপুলটি তৈরি করা হয়েছে। উড়ালপুল থেকে চার লেনের গাড়ি কেষ্টপুরের দিকে নামার পরে একটি সরু রাস্তায় মিশছে। এতে দমদম পার্ক এলাকায় যানজট হচ্ছে। অন্য দিকে আবার উড়ালপুল থেকে জোড়ামন্দিরের দিকে নামার মুখে রয়েছে ‘কাট-আউট’। সেখান দিয়ে সাধারণ মানুষ পার হচ্ছেন। ফলে গতিতে নেমে আসা গাড়িগুলিকে হঠাৎই গতি থামিয়ে দিতে হচ্ছে। উড়ালপুলের উপর দিয়ে কত টনের গাড়ি যাতায়াত করতে পারে তার কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। উড়ালপুলের উপর গাড়ির গতিবেগ ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার আবার কোথাও লেখা রয়েছে ৩০ কিলোমিটার। উড়ালপুলের মুখে ‘স্পিড ব্রেকার’ নেই।
তবে উড়ালপুল চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন বলেই মনে করছেন অনেকে। এ দিনের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণেন্দ বসু, ছিলেন সুজিত বসু, সৌগত রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, নির্মল ঘোষের মতো তৃণমূল নেতারা।