প্রতীকী ছবি।
কসবা থানা এলাকায় ১৮ বছরের এক তরুণের আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। অবস্থা সঙ্কটজনক।
প্রতিবেশীদের একাংশের অভিযোগ, ওই এলাকার একটি ফাঁকা সরকারি জমিতে অবৈধ ভাবে পাঁচিল তুলছিল স্থানীয় কয়েক জন যুবক। বুধবার মাঝরাতে সেই কাজ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, কাজ বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে। সরকারি জমিতে পাঁচিল তুলতে দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান। রাতারাতি এ ভাবে পাঁচিল তোলা কেন শুরু হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ওই তরুণ। অভিযোগ, প্রশ্ন তোলায় তাঁকে খুনের হুমকি দেয় পাঁচিল তোলার কাজে যুক্ত যুবকেরা। এমনকি, সন্ধ্যায় ওই তরুণের বাড়িতে গিয়ে মারধরের হুমকিও দেওয়া হয়।
ওই তরুণের পরিবার সূত্রের খবর, হুমকির জেরে তিনি মুষড়ে পড়েন। তাঁর মা বলেন, ‘‘ওরা হুমকি দিয়ে চলে যাওয়ার পরেই ছেলে মুষড়ে পড়ে। নিজের ঘরে চলে যায়। এর পরে রাতের দিকে হঠাৎ ওর ঘর থেকে একটা আওয়াজ শুনে ছুটে গিয়ে দেখি, ও সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় দড়ি বেঁধে ঝুলছে। সেই সঙ্গে বাঁ হাতের শিরাও কাটা। সেখান দিয়ে ঝরঝর করে রক্ত পড়ছে।’’
সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণকে একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁর মা বলেন, ‘‘ও সাতে-পাঁচে থাকে না। খুব শান্ত ছেলে। শুধু প্রশ্ন করেছিল, কেন ওই ভাবে সরকারি জমিতে পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে। তার পর থেকেই হুমকি দেওয়া শুরু হয়। তাতেই আমার ছেলে ভয় পেয়ে যায়। যারা ওকে হুমকি দিয়েছিল, তাদের প্রত্যেকের নামে কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই ফাঁকা জমিতে পাঁচিল তোলার কাজ বন্ধ রয়েছে। জমির পাশেই বসেছে পুলিশ-পিকেট। সরকারি জমিতে কারা ওই ভাবে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু করেছিল, তা নিয়ে তিনি অন্ধকারে বলে দাবি করলেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর লিপিকা মান্না। লিপিকা বলেন, ‘‘আমি নতুন কাউন্সিলর হয়েছি। সবটা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। এ বার সব কিছুই শক্ত হাতে সামলাতে হবে।’’
তবু প্রশ্ন উঠেছে, খাস কলকাতায় কসবার মতো জায়গায় কাউন্সিলরকে অন্ধকারে রেখে কী ভাবে রাতারাতি একটি সরকারি জমিতে পাঁচিল ওঠার কাজ শুরু হয়? সরকারি জমিতে পাঁচিল তোলার ঘটনার কথা জানার পরেও তিনি প্রশাসনকে বিষয়টি জানাননি কেন? স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের আবার অভিযোগ, অভিযুক্তেরা সকলেই কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ। এ বিষয়ে লিপিকা বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে মিছিলে বা সভায় অনেকেই থাকে। তারা কে, কী কাজ করে, সবটা আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয়।’’ লিপিকার আবার দাবি, ওই তরুণের আত্মহত্যার চেষ্টার পিছনে যে কারণের কথা বলা হচ্ছে, তা পুরোপুরি ঠিক নয়। কসবা থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’