রাতের স্টেশনে টহল দিচ্ছিলেন রেল পুলিশের কর্মীরা। প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে রেললাইনের ধারে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওই টহলদার দলটি। আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় দলটি দু’ভাগে ভাগ হয় রেললাইন টপকে পৌঁছে যায় ওই যুবকের কাছে। ওই যুবকের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি পায় রেল পুলিশ। থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করতেই বেরিয়ে আসে ওই যুবকের পরিচয়।
পুলিশ জানায়, সোমবার শেষ রাতে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে রেল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ওই যুবক আসলে ছিনতাইবাজ। তার নাম রিপন মণ্ডল। বাড়ি পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার মুকুন্দপুর দাসপাড়ায়। মঙ্গলবার ধৃতকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, রিপন পুজোর আগে শিয়ালদহ স্টেশনে এক ব্যক্তির গলার হার ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। ২০ সেপ্টেম্বর রাতে শিয়ালদহ থেকে মালদহে যাচ্ছিলেন আনন্দ ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই চলন্ত ট্রেন থেকে তাঁর গলার হার ছিনতাই করে পালায় এক দুষ্কৃতী।
তদন্তকারীরা জানান, শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রাতের দিকে ছাড়া ট্রেনের যাত্রীদের টার্গেট করত একটি ছিনতাই-চক্র। রিপন সেই দলের সদস্য। শিয়ালদহ রেল পুলিশ ছাড়া সোনারপুর, হাওড়া রেল পুলিশ-সহ বিভিন্ন থানায় একাধিক ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে তার নামে। সূত্রের খবর, শিয়ালদহ স্টেশনে পরপর এমন ঘটনায় জিআরপি-র আধিকারিকের নির্দেশে বিশেষ অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, টহলদারির জেরে শিয়ালদহ চত্বরে এই ধরনের ছিনতাই বা চুরির ঘটনা কমেছে। সেপ্টেম্বর মাসে ১৯টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও অক্টোবরে তা কমে হয়েছে ১২টি।
লালবাজারের দাবি, ধৃত রিপন বছর চারেক আগে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। পরে সে জামিনে ছাড়া পায়। ২০১৩ সালে পূর্ব যাদবপুর থানায় একটি ছিনতাইয়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এক গোয়োন্দা কর্তা জানান, বছর পাঁচেক আগে দক্ষিণ শহরতলিতে পরপর ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল। তখন তদন্তকারীরা পরপর বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছিলেন। তার মধ্যে রিপনও ছিল।