চাকরির প্রশিক্ষণের প্রথম দিন ছিল। তাই অফিস যাবেন বলে সাতসকালেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু অফিস পৌঁছনোর আগেই বাসের চাকা পিষে দিল তাঁকে। মৃত্যু হল ২৬ বছরের মামণি দাসের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সল্টলেকে ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এবং সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ জানিয়েছে, সেক্টর ফাইভে ঢোকার মুখে ফায়ার ব্রিগেড মোড়ে বাস থেকে নেমে রাস্তা পার হতে গিয়ে একটি বাসের ধাক্কায় মামণি পড়ে যান। বাসটির পিছনের চাকা তাঁর মাথার উপর দিয়ে চলে যায় বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত মানুষেরা। পুলিশ এসে মামণিকে উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মামণি ওই বাসটি থেকেই নেমেছিলেন কি না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দানেশ শেখ লেন-নিউ টাউন রুটের একটি বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে রাস্তায়। সেটির সামনে দিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময়ে আচমকা চালক বাসটি চালিয়ে দেন এবং তাতেই বাসের তলায় পড়ে যান মামণি। বাসটি কয়েক ফুট তাঁকে ছেঁচড়ে নিয়ে যায়। বাসটিকে আটক করা হলেও বাসের চালক পালিয়ে যায়।
ঘটনার পরে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায় মৃত তরুণীর পরিচয় জানতে। কারণ তাঁর সঙ্গের ব্যাগে কোনও রকম পরিচয়পত্র মেলেনি। পরে পুলিশ জানায়, ওই তরুণীর নাম মামণি দাস। তাঁর বাড়ি বেলগাছিয়া এলাকায়। দুর্ঘটনার প্রায় দু’-তিন ঘণ্টা পরে পুলিশ মামণির নাম এবং ফোন নম্বর জানতে পারে। খবর দেওয়া হয় তাঁর বাড়িতে। মামণির বাবা-মা এবং স্বামী রাকেশ প্রসাদ সেক্টর ফাইভে ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানায় আসেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন একটি মোবাইল সংস্থার কলসেন্টারে কাজের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে আসছিলেন মামণি।
মামণির স্বামী রাকেশ বিকেলে থানায় পৌঁছে কাঁদতে কাঁদতে জানান, তিনি সামান্য আয়ের একটি চাকরি করেন। সে কারণে চাকরি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মামণি। এ দিন সকালে সেই কাজের সূত্রেই প্রশিক্ষণ নিতে সল্টলেক গিয়েছিলেন তিনি।