—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পথের বিধিভঙ্গের সংখ্যার নিরিখে গত বছরের প্রথম দিনকেঅনেকটাই পিছনে ফেলে দিল নতুন বছরের প্রথম দিন। গত বছর ওনতুন বছরের মধ্যে তুলনা টানলে দেখা যাচ্ছে,শুধু প্রথম দিনেই পথ-আইন ভঙ্গের সংখ্যা বেড়েছে ৪৮২টি!লালবাজারের দেওয়া এই পরিসংখ্যানে প্রশ্ন উঠছে, এটা কি নজরদারি বাড়ানোর ফল, না কি আইন ভাঙার প্রবণতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত?বিধিভঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিসংখ্যানে বিনা হেলমেটে বাইক চালানোরপ্রবণতা এবং মত্ত চালকদের দৌরাত্ম্য— দুই-ই বৃদ্ধির ইঙ্গিত রয়েছে লালবাজারের দেওয়া তথ্যে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সব চেয়ে নিরাপদ শহরের তকমা পাওয়া কলকাতায় কবে কমবে পথের বিধি ভাঙা?
সম্প্রতি প্রকাশিত এনসিআরবি-র রিপোর্টে দেশের মধ্যে সব চেয়েনিরাপদ শহরের তকমা পেয়েছে কলকাতা। এখানে অপরাধেরসংখ্যা দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় কম হওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে তা নিজেদের সাফল্য হিসেবেই দাবি করেছে লালবাজার। যদিও সেই নিরাপদ শহরেই উৎসবেরদিনে পথের আইন ভাঙা একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে বহু গুণ। লালবাজারের তথ্য অনুযায়ী, বছর শেষের মতো শুরুর দিনেও গোটা শহর জুড়ে বিশেষ নজরদারিরব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই নজরদারিতেই পথ-আইন ভঙ্গে মোট ৮২৮টি মামলা রুজু করেছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি সেই সংখ্যা ছিল ৩৪৬।
বাইক-আরোহী ও চালকের মাথায় হেলমেট না থাকা, বেপরোয়াগতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, এ সবই গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। হেলমেট না পরে বাইকচালানোয় ৩০৭ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে লালবাজার। যেখানে গত বছর এই অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল ৭৬টি ক্ষেত্রে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগের সংখ্যাও এ বছর বেড়েছে ৫৬টি। এ জন্য১৬১ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, শহরে বেড়েছে মত্ত চালকের দৌরাত্ম্যও। নতুন বছরের প্রথম দিনে ১৪৬ জন চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে লালবাজার। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি এইবিধি ভাঙার সংখ্যা ছিল ১০১। এ বছর বেড়েছে গ্রেফতারির সংখ্যাও।
এই পরিসংখ্যান বৃদ্ধি প্রসঙ্গে যদিও লালবাজার দাবি করেছে, বিধিভঙ্গে পুলিশ কঠোর হওয়ার ফলেই এই ছবি। তাদের দাবি, ২৫ ডিসেম্বরের পর থেকেই শহরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। বিধিভঙ্গ এড়াতে অতিরিক্তপুলিশও মোতায়েন করা হয়। আইনভঙ্গে ধরপাকড় করা হয়। শুধুমাত্র পয়লা জানুয়ারি এ বছর৩৪১ জনকে গ্রেফতার এবং প্রায় ১৫ লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘পুলিশ রাস্তায় কঠোর থাকায় এই সংখ্যা বেড়েছে। ডিভিশনের পাশাপাশি লালবাজারের একাধিক দল শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়েছে। শহরের নিরাপত্তা যাতে কোনও ভাবেইবিঘ্নিত না হয়, সব সময়ে সেই চেষ্টাই করা হয়। সেটাই বর্ষবরণের উৎসবেও বহাল ছিল।’’