woman

Barasat: স্মৃতি হারিয়ে হাসপাতালে, দেড় বছর পরে বাড়ি এলেন বৃদ্ধা

হাসপাতালের রেকর্ড বলছে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব আয়েশা বিবি। তাঁর স্নায়ুরোগের সমস্যা ছিল। সেই সঙ্গে পায়েও আঘাত ছিল।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২১ ০৬:১৩
Share:

ফেরা: ছেলে জাকির বৈদ্যের সঙ্গে বাড়ির পথে আয়েশা বিবি। সোমবার, বারাসত হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন বৃদ্ধা, দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর সে কথা জানা ছিল না পরিবারের। তার পরে বহু চেষ্টা করেও মাকে খুঁজে পাননি ছেলে। শেষে প্রতিবেশী এক তরুণী সম্প্রতি বারাসত জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান, সেখানেই ভর্তি রয়েছেন আদতে ভোজেরহাটের বাসিন্দা, আয়েশা বিবি নামে ওই বৃদ্ধা। সেই তরুণী খবর দেওয়াতেই শেষ পর্যন্ত সোমবার ‘হারানো’ মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন ছেলে।

Advertisement

হাসপাতালের রেকর্ড বলছে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব আয়েশা বিবি। তাঁর স্নায়ুরোগের সমস্যা ছিল। সেই সঙ্গে পায়েও
আঘাত ছিল।

হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডলের কথায়, ‘‘ওই বৃদ্ধা এক প্রতিবেশীর সঙ্গে সার্জারি বিভাগে এসেছিলেন। কিন্তু আচমকা তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে জরুরি বিভাগে তাঁকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। শুরুর দিকে কোথায় বাড়ি, কিছুই বলতে পারতেন না। পরের দিকে শুধু ভোজেরহাট কথাটা বলতে পারতেন। কিন্তু যাঁর সঙ্গে তিনি এসেছিলেন, তিনি কেন বৃদ্ধার পরিবারকে কিছু জানাননি, সেটাই আশ্চর্যের।’’

Advertisement

বৃদ্ধার থেকে ভোজেরহাটের নাম জেনে হাসপাতালের তরফে বারাসত থানায় ঘটনাটি জানানো হয়েছিল। বারাসত পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, প্রথম দিকে এ নিয়ে খোঁজখবর করা হলেও পরে অতিমারি আবহে পুলিশ অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

অন্য দিকে, মাকে খুঁজে না পেয়ে আয়েশার ছেলে জাকির বৈদ্য স্থানীয় লেদার কমপ্লেক্স থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। তিনি জানান, থানা থেকে কয়েক বার কয়েক জন বৃদ্ধাকে চিহ্নিত করার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল।

পেশায় ভ্যানচালক জাকির বলেন, ‘‘পুলিশ যাঁদের দেখিয়েছিল, তাঁরা কেউই আমার মা নন। মায়ের খোঁজে কলকাতার বহু হাসপাতালে ঘুরেছি। ফিরে পাওয়ার আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত এক প্রতিবেশীর মেয়ে বারাসত হাসপাতালে মাকে দেখতে পেয়ে বাড়িতে খবর দেন।’’

জাকির আরও জানান, তাঁর মা কিছু মনে রাখতে পারেন না। তাই কোন প্রতিবেশীর সঙ্গে তিনি ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন, সেটাও তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয় বলেই দাবি। এ দিন ওই বৃদ্ধাও জানাতে পারেননি, তিনি কী ভাবে ওই হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন। তবে এত দিন পরেও ছেলেকে চিনে নিতে ভুল হয়নি মায়ের।

কী ভাবে মিলল বৃদ্ধার খোঁজ?

জাকিরদের প্রতিবেশী, ভোজেরহাটের বাসিন্দা রামিচা বিবি বিয়ের পরে হাড়োয়ায় থাকেন। দিন পনেরো আগে শ্বশুরবাড়ির দিকের এক আত্মীয়ার চিকিৎসা করাতে তাঁকে নিয়ে বারাসত হাসপাতালে গিয়েছিলেন রামিচা। ঘটনাচক্রে, আয়েশার কাছাকাছি একটি শয্যায় ভর্তি করানো হয়েছিল ওই আত্মীয়াকে। আর তখনই রামিচার নজরে পড়ে যান ওই বৃদ্ধা।

রামিচা এ দিন বলেন, ‘‘ওঁকে দেখেই আমার চেনা চেনা লেগেছিল। ওঁর পায়ে আঘাতের চিহ্নটাও চেনা মনে হওয়ায় ওঁর কাছে ঠিকানা জানতে চাই। কিন্তু উনি আমায় কিছু বলেননি। তবে সন্দেহ হওয়ায় জাকিরদের বাড়িতে খবর পাঠাই।’’ সেই খবর পেয়েই দিন কয়েক আগে হাসপাতালে এসে মাকে খুঁজে পান জাকির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement