ফাইল চিত্র।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আছে, এমন যাত্রীদের রেলে সফরের ক্ষেত্রে বৈধ শংসাপত্র থাকলে ‘দিব্যাঙ্গ’ কোটায় টিকিট কাটার ব্যবস্থা রয়েছে। সাধারণত সংরক্ষিত স্লিপার কামরায় চারটি এবং বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণির কামরায় দু’টি বার্থ সংশ্লিষ্ট যাত্রী এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের সহকারীদের জন্য বরাদ্দ থাকে। নিয়ম অনুযায়ী, এমন যাত্রীদের লোয়ার বা সাইড লোয়ার বার্থ দেওয়ার কথা। কিন্তু সম্প্রতি বছর ২৬-এর এক যুবক রেলকে অভিযোগে জানিয়েছেন, জন্মগত ভাবে দৈহিক উচ্চতাজনিত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে মুম্বইগামী দুরন্ত এক্সপ্রেসে নীচের বার্থ দেওয়ার বদলে মাঝের বার্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সঙ্গে সহকারী হিসেবে যাত্রা করা তাঁর বন্ধুকে দেওয়া হয়েছে উপরের বার্থ। অভিযোগকারীর দাবি, তিনি বিষয়টি নিয়ে ইমেলে আইআরসিটিসি-কে অভিযোগ জানালে তাঁরা সমস্যার কথা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করলেও কোনও সুরাহা বাতলায়নি। উল্টে ওই টিকিট বাতিল করে তাঁকে নতুন করে টিকিট কাটতে বলা হয়েছে।
ওই যুবক এবং তাঁর সঙ্গী বন্ধু মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসে শিশু-সুরক্ষার উপরে একটি বৃত্তিমূলক পাঠক্রমের পড়ুয়া। কাল, ১৩ মে হাওড়া-মুম্বই দুরন্ত এক্সপ্রেসের জন্য আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কেটেছিলেন তাঁরা। বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণিতে দু’জনের টিকিট বাবদ লেগেছিল সাত হাজারেরও বেশি টাকা। ওই যুবক অভিযোগে জানিয়েছেন, অনলাইনে টিকিট কাটার জন্য যে সব নথি জমা দিতে হয়, সবই তিনি দিয়েছিলেন। নির্দিষ্ট পিএনআর নম্বরের পাশে তাঁর টিকিট যে প্রতিবন্ধী কোটায় বুক করা হয়েছে, সে কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি নির্ধারিত বার্থ পাননি। অভিযোগকারী বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে টিকিট কাটার পরেও রেলের ব্যবস্থাগত ত্রুটির জন্য এই ভোগান্তিতে পড়তে হল। কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করলেও সমস্যার সমাধান বাতলাননি। টিকিট বাতিল করতে গিয়ে যে টাকা গুণাগার দিতে হবে, তার দায় নেবে কে?’’
রেল সূত্রের খবর, কামরায় আসন ভাগাভাগির প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল। প্রায় ১২ ধরনের কোটার জন্য বরাদ্দ আসন ছেড়ে বাকি আসন সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় বয়স্ক এবং মহিলা যাত্রীদের আসন বণ্টনের উপরে। প্রবীণ যাত্রীদের উপরের বার্থ না দেওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়। পাশাপাশি, যে সব মহিলা যাত্রী একা সফর করছেন, বিশেষ সতর্ক থাকতে হয় তাঁদের আসন বণ্টনের ক্ষেত্রেও। এমন একাধিক বিষয়
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা যাত্রীদের লোয়ার বা সাইড লোয়ার বার্থ দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হয় বলে রেল সূত্রের খবর।
রেলকর্তাদের অনুমান, অভিযোগকারী যুবকের ক্ষেত্রে টিকিট কাটার সময়ে সংশ্লিষ্ট কামরায় আসনের চাহিদা এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিষয়টি নির্ধারিত হওয়ার সময়ে কোথাও সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।
এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কে এস আনন্দ বলেন, ‘‘আমরা ওই যাত্রীর বিষয়টি শুনেছি। তাঁর সমস্যা মেটাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’’