অবিলম্বে: ৫০ বছরের পুরনো বিজন সেতু কেমন আছে, জানতে প্রয়োজন স্বাস্থ্য পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
বিজন সেতুর ভবিষ্যৎ ঝুলেই রইল!
এই উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) কলকাতা পুলিশকে দু’বার প্রস্তাব দিয়েছিল। তার পরেও কিছু হয়নি। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকেই যায়, কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা না ঘটলে কী ওই উড়ালপুলের পরীক্ষা হবে না?
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শহরের যে ক’টি উড়ালপুল এবং সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে সেগুলির মেরামতির জন্য দরপত্র আবেদনের পরিকল্পনা রয়েছে। অথচ, দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম উড়ালপুল বিজন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এখনও করাই হল না। কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) পুজোর আগে এবং পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৭২ ঘণ্টা উড়ালপুল বন্ধ রাখার পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দাবি, এখনও পুলিশের তরফে জবাব দেওয়া হয়নি।
কেএমডিএ-র ‘ব্রিজ কমিটি’ রয়েছে। সেই কমিটির সদস্যদের অবশ্য দাবি, প্রাথমিক ভাবে পঞ্চাশ বছরের পুরনো ওই সেতুতে কাঠামোজনিত কোনও সমস্যা না থাকলেও প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকতেই পারে। সেই কারণেই ওই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কথা ভাবা হয়েছে। ওই কমিটির মতে সেতুটি এখনই ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় না পৌঁছলেও সেটিকে দ্রুত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। যাতে সেটিতে মেরামতির কাজ করা যায়। কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশেই শহরের সব ক’টি উড়ালপুল এবং সেতুর পরীক্ষা হচ্ছে। বিজন সেতুর জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।’’
পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না কেন?
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘ট্র্যাফিকের সমস্যা তো আছেই। এই ব্যাপারে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্র্যাফিক পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব।’’
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, এই উড়ালপুল বন্ধ করলে প্রস্তাবিত যে বিকল্প রুটের কথা ভাবা হয়েছিল তা হল রুবি কানেক্টর থেকে গাড়িয়াহাটগামী বাস
কালিকাপুরের সামনে দিয়ে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টর হয়ে যাদবপুর থানার সামনে দিয়ে ঘুরে যাবে। অন্য দিকে, রুবির দিকে যাওয়ার জন্য সমস্ত বাস যাদবপুর থানার সামনে দিয়ে প্রিন্স আনোয়ার শাহ কানেক্টর দিয়ে বার করা হবে। কিন্তু ছোট গাড়ির ক্ষেত্রে আশপাশের গলি ব্যবহার করা হবে বলে পুজোর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বর্তমানে বিজন সেতু বন্ধ রাখলে ওই প্রস্তাবিত পরিকল্পিত রুট রাখা হবে কি না তা নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয় বলেও ট্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানান।
ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, পুজোর আগে বিজন সেতু বন্ধ রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলেও যানজটের আশঙ্কায় সেই প্রস্তাব বাতিল হয়। পুজোর পরেও নভেম্বর মাসেও ক্রিকেট খেলা, বিয়ের মরসুম, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-সহ বিভিন্ন কারণেই কেএমডিএ-র প্রস্তাব স্থগিত রাখা হয় বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, বিজন সেতুর নীচের বাজার-দোকানও স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়ে বন্ধ রাখতে পারলে ভাল হয়। সেতুর গায়ে যে সমস্ত গাছ গজিয়েছিল সেগুলি কাটার জন্য কেএমডিএ ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে বলেও কেএমডিএ জানায়।