পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় আত্মহত্যা করেছে কিশোর। প্রতীকী চিত্র।
এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে নিউ আলিপুরে। শনিবার সকালে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় তার ঝুলন্ত মৃতদেহ। পুলিশের অনুমান, পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় আত্মহত্যা করেছে ওই কিশোর। যদিও অন্য তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের পাশাপাশি মৃতদেহের ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। সেই রিপোর্ট এলে তবেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে মন্তব্য করতে চাইছে লালবাজার।
সূত্রের খবর, নিউ আলিপুরের বাসিন্দা, বছর সতেরোর ওই কিশোর এ বারই বাড়ির কাছের একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিল। তার বাবা গাড়ি চালান। মা দীর্ঘদিন আলাদা থাকেন। কিশোরটি তার পিসির কাছেই বড় হচ্ছিল। তিনি স্থানীয় বাজারে ফুল বিক্রি করেন। সেই পিসি এ দিন বলেন, ‘‘মাধ্যমিকে কেমন ফল হবে, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে খুব চিন্তা করছিল ও। আমরা বলেছিলাম, যা হয় হবে। শুক্রবার দুপুরে ওকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম রেজ়াল্ট আনতে। কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরেই বলল, প্রবল ভিড়, চলো আগামী কাল আসব। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেও চিন্তিত দেখায় ওকে। এক বন্ধুর মোটরবাইক ওর কাছে ছিল। সেটাও দিয়ে আসে। রাতে রুটি-আলুভাজা খেয়ে ঘুমোতে যায়। সকালে দেখি, এই অবস্থা। কেমন রেজ়াল্ট হয়েছে, আমরা এখনও জানি না। খারাপ হয়েছে বলেই এমনটা করল হয়তো।’’
ওই ছাত্রের স্কুলের তরফেও এ ব্যাপারে কেউ মন্তব্য করতে চাননি। সে পরীক্ষায় কত পেয়েছে, তা-ও জানা যায়নি। রাত পর্যন্ত সেই তথ্য জানে না পুলিশও। এ দিন ওই কিশোরের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, তেতলার ফ্ল্যাটে তিনটি আলাদা ঘর বাবা, পিসি এবং ওই কিশোরের। কিশোরের ঘরে বিছানায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা বই-খাতা। খাটের কাছেই মাটিতে খাঁচায় রাখা পোষ্য সাদা ইঁদুর। সে সব দেখিয়ে তার পিসি বলেন, ‘‘পড়াশোনায় তেমন ভাল না হলেও ও দারুণ ফুটবল খেলত। কিন্তু পরীক্ষার রেজ়াল্ট নিয়ে চিন্তাই সব শেষ করে দিল। ও কত পেয়েছে, জানি না। ওর রেজ়াল্ট আর তুলব কি না, সেটাও ভেবে দেখতে হবে।’’