Mountain Police

ঘোড়াদের সুস্থ রাখতে স্যালাইন দিচ্ছে পুলিশ

পুলিশ সূত্রের খবর, লকডাউনের জেরে ঘোড়াগুলিকে ময়দানে পাঠানো হচ্ছে না।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২২
Share:

যত্ন: আস্তাবলে চলছে শুশ্রূষা। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনের জেরে বিপাকে কলকাতা পুলিশের ঘোড়সওয়ার বাহিনী।

Advertisement

এস এন ব্যানার্জি রোডে কলকাতা পুরসভার সদর দফতরের উল্টো দিকে কলকাতা মাউন্টেড পুলিশের আস্তাবলে এখন রয়েছে ৪৬টি ঘোড়া। কারও নাম প্রিয়দর্শিনী, কারও নাম চারুলতা, কারও নাম ম্যাজিক, কেউ বা পরিচিত অ্যামব্রয়েড নামে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় শারীরচর্চার জন্য তাদের ময়দানে নিয়ে যেতেন পুলিশকর্মীরা। শারীরচর্চার মতোই নিয়মে বাঁধা ওই ঘোড়াদের খাদ্যতালিকা। কিন্তু লকডাউন যাবতীয় অভ্যাস বদলে দিয়েছে। খাবার থেকে শুরু করে ওষুধপত্র— কিছুই ঠিকমতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

পুলিশ সূত্রের খবর, লকডাউনের জেরে ঘোড়াগুলিকে ময়দানে পাঠানো হচ্ছে না। তাই তাদের শারীরিক কসরতের জন্য ভরসা এখন ধর্মতলায় প্রেস ক্লাব সংলগ্ন প্যাডক। লকডাউনের নিয়ম মেনে সেখানেও অবশ্য তারা অবাধে যাওয়া-আসা করতে পারছে না। প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশকর্মী না-থাকায় বেশির ভাগ ঘোড়াকে আস্তাবলেই রাখতে হচ্ছে। কলকাতা মাউন্টেড পুলিশের পশু চিকিৎসক সুরজিৎ বসু বললেন, ‘‘ঘোড়াদের সুস্থ রাখতে তাদের সচল ও সক্রিয় রাখাটা খুব জরুরি। কিন্তু লকডাউনের জন্য ওরা বেশির ভাগ সময়ে আস্তাবলে থাকায় আমাদের আরও বেশি সচেতন থাকতে হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ঘোড়াদের নিয়মিত শারীরচর্চা না করালে পায়ের অসুখ থেকে পেট ব্যথা— নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই কারণে এখন ২৪ ঘণ্টাই ওদের পর্যবেক্ষণে রাখতে হচ্ছে। এই অবস্থায় ওদের সুস্থ রাখতে আস্তাবলে রেখে স্যালাইনও দেওয়া হচ্ছে।’’ মাউন্টেড পুলিশের ওসি অভ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ঘোড়াদের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু ওষুধও আসছে না। খুব সমস্যা হচ্ছে।’’

Advertisement

মাউন্টেড পুলিশ সূত্রের খবর, মাসে দু’বার করে ঘোড়াদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হয়। ওদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে জই, ভুসি, গাজর, পেঁপে, বিচালি। কিন্তু লকডাউনের জন্য পেঁপে অমিল। জই, গাজরও তলানিতে ঠেকেছে। বিচালিও পাওয়া যাচ্ছে না। অভ্রবাবুর কথায়, ‘‘লকডাউনের পর থেকে ওদের মেপে মেপে খাবার দিতে হচ্ছে। এর পরে কী হবে, জানি না।’’

প্রেস ক্লাবের পাশে প্যাডকে ঘোড়াদের নিয়ে যাওয়া হলেও তা বেশ অনিয়মিত। আগে যেখানে ঘোড়াদের পরিচর্যার জন্য ঘোড়া-পিছু এক জন করে সহিস থাকতেন, এখন সেখানে ৪৬টি ঘোড়ার পরিচর্যার জন্য রয়েছেন মাত্র ৩০ জন সহিস। মাউন্টেড পুলিশ সূত্রের খবর, পর্যাপ্ত সংখ্যক সহিস না-থাকায় বর্তমানে সিভিক ভলান্টিয়ারেরাই সহিসের কাজ করছেন। কিন্তু তাঁদের সংখ্যাও বেশি নয়। এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘লকডাউনের জন্য দূর-দূরান্তের বেশির ভাগ সিভিক ভলান্টিয়ার বাড়িতে আছেন। তাই ঘোড়াদের পরিচর্যায় সমস্যা হচ্ছে।’’ সুরজিৎবাবুর কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আস্তাবলের স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলতে হলে কর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যানিটাইজ়ার দরকার। কিন্তু তা নেই।’’ এস এন ব্যানার্জি রোড ছাড়াও আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে ২৯টি ঘোড়া রয়েছে। সেখানকার ঘোড়াদের গড় বয়স কুড়ি বছর। লকডাউনের জেরে সমস্যা সেখানেও। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘মাউন্টেড পুলিশের ঘোড়াদের খাবার ও ওষুধ সরবরাহে যাতে সমস্যা না হয়, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement