ক্ষতি: গাছ থেকে তোলা ফুল পড়ে রয়েছে মাঠে। কোলাঘাটে। নিজস্ব চিত্র
বিক্রি না হওয়ায় দুধ ফেলে দিতে হচ্ছিল। কিছু দিন আগে এমনই অভিযোগ করেছিলেন দুধের ব্যবসায়ীরা। এ বার ফুল চাষিরা জানাচ্ছেন, বাগানে ফুল উপচে পড়ছে। কিন্তু সেই ফুল তুলে কোনও লাভ হচ্ছে না। লকডাউনের কারণে মল্লিকঘাট-সহ কলকাতার সব ফুলের বাজার বন্ধ। তাই বিক্রিও নেই। গাছ থেকে তুলেও সেই ফুল ফেলে দিতে হচ্ছে। তাই প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য বাজার চালু রাখার আবেদন জানিয়ে সরকারের কাছে ই-মেলে স্মারকলিপি দিলেন ফুল চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
মল্লিকঘাট ফুল বাজারের ফুল চাষিরা জানাচ্ছেন, শীতের পরে বসন্তে দক্ষিণের বাতাসে রজনীগন্ধা, বেল, জুঁই, গাঁদা ফুলের ব্যাপক ফলন হয়। এই ফলন বর্ষা পর্যন্ত চলে। ফুল বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, গাছে ফুল ফুটে আছে। অথচ বিক্রি করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ফুল না তুলে যদি গাছেই রেখে দেওয়া হয়, তা হলে সেই গাছে পরে আর কুঁড়ি আসবে না। তার ফলে যখন লকডাউন উঠবে, তখন আর ওই গাছে ফুল হবে না। তাই চাষিরা এখন বাধ্য হয়েই গাছ থেকে ফুল তুলে ফেলে দিচ্ছেন।
দৈনিক কয়েক ঘণ্টার জন্য ফুল বাজারগুলি চালু করার আবেদন জানিয়ে শনিবার সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উদ্যান পালন দফতরের মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা, এবং কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারকে ইমেল করে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে যে ভাবে আনাজের বাজারগুলি চলছে সেই ভাবে প্রত্যেক দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য অন্তত ফুল বাজারগুলি চালু করার আবেদন জানানো হয়েছে। লকডাউন পরিস্থিতিতে ফুল চাষিরা আর্থিক ভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কিছু ক্ষণ ফুল বাজার চালু থাকলে অন্তত কিছু ফুল বিক্রি হবে। চাষিরা উপকৃত হবেন।’’
প্রসঙ্গত, রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো বিভিন্ন জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় এই সময়ে ব্যাপক ফুলের চাষ হয়। নারায়ণবাবু জানান, ওই ফুল কলকাতার সমস্ত বাজারে নিয়ে যান চাষিরা। নববর্ষ থেকে শুরু করে নানা উৎসব-পার্বণ, বিয়ের মরসুম-সহ সবেতেই ফুল লাগে। এই সময়েই ফুল চাষিরা লাভের মুখ দেখেন। এ বার করোনার জেরে সব অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)