ফাইল চিত্র।
লকডাউনের মধ্যে যাঁরা কলকাতা বিমানবন্দরে জরুরি পরিষেবা দিতে আসবেন, তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করবেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এমনটাই স্থির হয়েছিল। সেই মতো লকডাউন শুরুর আগেই ২২ মার্চ থেকে চালু হয় কুপন ব্যবস্থা। ঠিক হয়, কর্মী-অফিসারেরা বিমানবন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজারের কাছ থেকে কুপন নেবেন। বিমানবন্দরে বাস টার্মিনাস লাগোয়া ক্যান্টিনে সেই কুপন দেখালে খাবার পাওয়া যাবে।
সে দিন থেকে গত পয়লা মে পর্যন্ত খাবার দেওয়ার পরে ক্যান্টিনের মালিক গোপাল শীল কর্তৃপক্ষের কাছে যে বিল দিয়েছেন, তা দেখে চোখ কপালে উঠেছে কর্তাদের। ৪২ দিনে বিল হয়েছে ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা! দিনে খাবার দিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৫০০ টাকা। তিনটি শিফটে কাজ হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি শিফটে খাবার বাবদ খরচ সাড়ে তিন হাজার টাকা। এর পরেই ২ মে থেকে কুপন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ডিউটিতে আসা সকলকে বলা হচ্ছে বাড়ি থেকে টিফিন আনতে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এখন উড়ছে শুধু পণ্য বিমান। তাও মেরেকেটে ২০টি। এই পরিষেবা চালু রাখতে প্রতি শিফটে উপস্থিত থাকছেন ৩০-৪০ জন কর্মী এবং অফিসার। তাঁদের কথা ভেবেই শুরু হয়েছিল কুপন ব্যবস্থা। ওই কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতে খাবার পেতে সমস্যা না-হয়, সে কারণে গোপালবাবুকে ক্যান্টিন চালু রাখার জন্য বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: কলকাতার কোন কোন এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন, দেখে নিন
সকালে যাঁরা ডিউটিতে ছিলেন, তাঁদের জন্য ছিল পুরি ও তরকারি। দাম ধরা হয়েছিল ৩০ টাকা। দুপুরে উপস্থিত কর্মী-অফিসারদের জন্য ছিল ভাত-ডাল-তরকারি-মাছ।
পরে ডিমের ঝোল শুরু হয়। তার দাম ছিল ৭০ টাকা। আর রাতের শিফটের কর্মী-অফিসারদের জন্য ছিল রুটির সঙ্গে কখনও ডিম তরকা, কখনও চানা মশলা। যার দাম ধরা হয়েছিল ৫০ টাকা।
কিন্তু বিল পেয়ে কিছুতেই হিসেব মেলাতে পারছেন না কর্তারা। কর্মী-অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, দেদার কুপন বিলি হয়েছে। ফলে যিনি সকালে খেয়েছেন, তিনি দুপুরে আবার খাচ্ছেন কি না, তা দেখা হয়নি। আরও অভিযোগ, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মীদের বাইরেও বিমানবন্দরের কাজের সঙ্গে যুক্ত অন্য লোকেরা এসে কুপন নিয়ে গিয়েছেন। এক দফা খেয়ে বাড়িতে খাবার নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
এখন বেগতিক দেখে কুপনই তুলে দেওয়া হয়েছে। গোপালবাবু বলেন, “আমার যা খরচ হয়েছে, তার বিল পাঠিয়েছি। টাকা এখনও পাইনি।” আর বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলছেন, “কী ভাবে এত খরচ হল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)