ফাইল চিত্র।
ভবিষ্যতে রবীন্দ্র সরোবরে মাছের মৃত্যুর মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য এর রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে (কেএমডিএ) যথাযথ পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। শুক্রবার মামলার নিষ্পত্তি করে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, কোনও বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে সরোবরের জল পরীক্ষা করাতে হবে। সেই সঙ্গে সরোবরের জলে যাতে সব সময়ে দ্রবীভূত অক্সিজেন (ডিজ়লভড অক্সিজেন বা ডিও) এবং জৈব অক্সিজেনের চাহিদা-মাত্রা (বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড বা বি ও ডি) বজায় থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এর কারণ, দূষকের অতিরিক্ত উপস্থিতি জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন কমিয়ে দেয়। দ্রবীভূত অক্সিজেন কমার অর্থ হল, জৈব অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যাওয়া। যা জলজ প্রাণীর মৃত্যুর অন্যতম কারণ। সেই কারণেই সরোবরে মরা মাছ ভেসে উঠেছিল কি না, তা নিয়ে সে সময়ে চর্চা শুরু হয়।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছিল পরিবেশ আদালত। জলে কোনও সমস্যা আছে কি না, শুনানি চলাকালীন তা দেখার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক জন করে প্রতিনিধি এবং কেএমডিএ-র সিইও-কে নিয়ে কমিটি গঠন করে আদালত। তার রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে কেএমডিএ। সরোবরে স্নানে নিষেধাজ্ঞা, খাবার নিয়ে প্রবেশ নিষেধ, প্রবেশে কড়াকড়ি করতে রক্ষী নিয়োগ, জলে নোংরা থাকলে দ্রুত পরিষ্কার করা এবং সরোবরকে প্লাস্টিক মুক্ত এলাকা করে তোলা-সহ একাধিক বিষয় উল্লেখযোগ্য বলে আদালতকে জানায় কেএমডিএ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সরোবরের জলের বর্তমান গুণমান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। একই সঙ্গে তারা জানায়, ভবিষ্যতে মাছের মড়ক রুখতে কী পদক্ষেপ করা হবে, তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। সেই সঙ্গে জলে ঢেউয়ের মাধ্যমে আলোড়ন তৈরি করে কী ভাবে দ্রবীভূত ও জৈব অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখা হবে, তা-ও জানানো হয়নি। তবে কেএমডিএ-র আইনজীবী পৌষালি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরোবরের জলের গুণমান রক্ষায় তাঁরা সতর্ক। জলে দ্রবীভূত এবং জৈব অক্সিজেনের মাত্রা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। পৌষালির কথায়, ‘‘সরোবরে সংস্থার অফিসে কমপ্লায়েন্ট রেজিস্টার রাখা হয়েছে। সরোবরে ভ্রমণকারী, পরিবেশকর্মী থেকে সরোবরপ্রেমী— সকলেই সেখানে অভিযোগ জানাতে পারবেন। দরকারে পদক্ষেপ করবে কেএমডিএ।’’