গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লকডাউন এবং কোভিড পরিস্থিতিতে আকাল স্ট্যাম্প পেপারের। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্ট্যাম্প পেপার জালিয়াতির কারবার চলছিল রমরমিয়ে। মঙ্গলবার কলকাতার বুকে এমন একটি জাল স্ট্যাম্প পেপার চক্রের হদিশ পেলেন রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকায় রাজ্য এসটিএফের গোয়েন্দারা দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার হয়েছে ২৫ লাখ টাকা মূল্যের জাল নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার-সহ কয়েক হাজার কোর্ট ফি স্ট্যাম্পও।
এসটিএফ সূত্রে খবর, বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁরা খবর পাচ্ছিলেন বিভিন্ন জায়গায় জাল নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার পাওয়া যাচ্ছে। মূলত জমি-বাড়ি দলিলের ক্ষেত্রে এই স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়। এই স্ট্যাম্প পেপার বিক্রি করে সরকারের প্রচুর রাজস্ব আদায় হয়। জাল স্ট্যাম্প পেপার নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, মঙ্গলবার বিকেলে এক ব্যক্তি এপিসি রোডে শিয়ালদহের কাছে ওই স্ট্যাম্প অন্য এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেবেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার আধিকারিকদের সহায়তায় এক ব্যক্তিকে আটক করেন। তার সূত্র ধরেই অন্য এক জনকে আটক করেন গোয়েন্দারা। দু’জনের কাছে ৫হাজার টাকা মূল্যের ৫০০টি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার পাওয়া যায়। ধৃতের ব্যাগ থেকে পাওয়া যায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যের কোর্ট ফি স্ট্যাম্প।
এসটিএফ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম রাধেশ্যাম গুপ্ত এবং পল্টু দে। রাধেশ্যামের বাড়ি কলকাতার মানিকতলায়। পল্টুর বাড়ি নিমতাতে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এরা দু’জন বিভিন্ন এজেন্টের কাছে ওই জাল স্ট্যাম্প পেপার পৌঁছে দিত। তবে চক্রের শিকড়ের হদিশ মেলে বনগাঁতে। প্রাথমিক তদন্তের পর গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, রাজু মন্ডল নামে বনগাঁর এক বাসিন্দার কাছ থেকে ‘জাল’ কোর্ট ফি স্ট্যাম্প পেত ধৃতরা। রাজু, ব্যবহৃত ‘কোর্ট ফি’ স্ট্যাম্পে রাসায়নিক ব্যবহার করে কালি- এবং ব্যবহারের সমস্ত প্রমাণ মুছে ফেলত। তারপর ফের বাজারে নতুন স্ট্যাম্প বলে বিক্রি করত। তবে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার সবই জাল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে উল্টোডাঙার একটা প্রেসে ছাপানো হত ওই জাল স্ট্যাম্প পেপার। প্রেসটির মালিকও বনগাঁর বাসিন্দা। গোয়েন্দাদের দাবি, গোটা জালিয়াতিতে বড় চক্র রয়েছে। ধৃতদের বুধবার বিচার ভবনে পেশ করা হবে। এসটিএফ সূত্রে খবর, ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে চাইবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: টাওয়ার বসানোর নাম করে প্রতারণা, ধৃত ১৩