tourism

পর্যটনে বাধা ভোট, হতাশ ভ্রমণপ্রেমীরা

অতিমারি পরিস্থিতিতে প্রায় এক বছর ঘরবন্দি থাকতে থাকতে নাভিশ্বাস উঠেছিল অনেকেরই। তাই সংক্রমণ কিছুটা কমতেই বেরিয়ে পড়তে চাইছেন অনেকে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২১ ০৭:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেউ ভেবেছিলেন, এ বছরের দোল কাটাবেন পুরুলিয়া বা বোলপুরে। কেউ আবার গরমের দিনগুলিতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন পাহাড়ি দার্জিলিঙে। সেই মতো ট্রেন-হোটেলের বুকিং সবই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ বার বাদ সেধেছে ভোটের নির্ঘণ্ট। অতিমারি পরিস্থিতির জেরে গত এক বছর ধরে ঘরবন্দিদের অনেকে এ বার ভোটের কারণে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে হতাশ এ রাজ্যের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

অতিমারি পরিস্থিতিতে প্রায় এক বছর ঘরবন্দি থাকতে থাকতে নাভিশ্বাস উঠেছিল অনেকেরই। তাই সংক্রমণ কিছুটা কমতেই বেরিয়ে পড়তে চাইছেন অনেকে। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ভিন্‌ রাজ্যের দিকে না গেলেও রাজ্যের মধ্যেই এ দিক ও দিক কয়েক দিনের সফরের কথা ভাবছেন অনেকেই। কিন্তু ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হতেই সেই সব পরিকল্পনা ফের বিশ বাঁও জলে।

বসন্ত উৎসবে প্রতি বছরই পুরুলিয়ার লাল মাটির দেশে পাড়ি জমান অনেকে। এ বছরেও সেই সংখ্যাটা বিশেষ কম ছিল না। অনেকেই হোটেলের বুকিংও সেরে ফেলেছিলেন। কিন্তু ২৮ মার্চ দোলের এক দিন আগেই, অর্থাৎ ২৭ মার্চ রাজ্যে প্রথম দফার নির্বাচন। সে দিনই পুরুলিয়ার ৯টি কেন্দ্রে ভোট। ফলে দোলে যাঁরা পুরুলিয়া যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন, তাঁদের অনেকেরই মাথায় হাত। এখন হোটেল বুকিং বাতিল করছেন তাঁরা।

Advertisement

কলকাতার বাইপাসের মেট্রোপলিটনের বাসিন্দা রাজর্ষি ঘোষ ভেবে রেখেছিলেন, ২৯ মার্চ গাড়ি চালিয়ে সপরিবার পুরুলিয়া যাবেন। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই পুরুলিয়ায় ওই ক’দিনের জন্য হোটেলে ঘরও ঠিক করে ফেলেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনার জন্য বহু দিন কোথাও ঘুরতে যাইনি। ইচ্ছে ছিল, দোলের সময়ে পুরুলিয়া যাব। তখন ওখানে পলাশ ফুল দেখা যায়। ভোট ঘোষণার আগেই হোটেল ঠিক করে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন সেই পরিকল্পনা এখন বাতিল করতে হয়েছে।’’

একই রকম ভোগান্তির শিকার উত্তরপাড়ার বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা বসু বলছেন, ‘‘দোলে ছেলেকে নিয়ে পুরুলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। সে জন্য ২৭ থেকে ২৯ মার্চের জন্য হোটেল ঠিক করেছিলাম জানুয়ারিতেই। কিন্তু ভোটের কারণে এই পরিকল্পনা পিছিয়ে দিতে হচ্ছে।’’

এপ্রিলের মাঝামাঝি আবার গরম এড়াতে দার্জিলিং যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন গড়িয়ার পূবালি ভট্টাচার্য। কিন্তু িনর্বাচনী নির্ঘণ্ট বলছে, আগামী ১৭ এপ্রিল দার্জিলিঙে ভোট। তাই বাধ্য হয়েই ট্রেনের টিকিট বাতিল করেছেন পূবালি। বলছেন, ‘‘রাজ্যের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সেটা আপাতত হচ্ছে না। তাই ভেবেছিলাম এপ্রিলে দার্জিলিং যাব। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াল নির্বাচনের তারিখ।’’ ভোটের গেরোয় এপ্রিলের শেষে বোলপুর ভ্রমণও বাতিল করেছেন লেক টাউনের বাসিন্দা, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ডোনা বসু।

করোনার পরে এ বার ভোটের কারণে রাজ্যের পর্যটন শিল্প কিছুটা হলেও মার খাবে বলে মনে করছেন অনেকে। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বাচ্চু চৌধুরী বলেন, ‘‘বসন্ত উৎসবে পুরুলিয়ায় অধিকাংশ হোটেলের বুকিং হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২৭ তারিখ পুরুলিয়ায় ভোট হওয়ায় সব বুকিংই প্রায় বাতিল।

পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য জায়গাতেও ভোটের কারণে বুকিং বাতিল হচ্ছে।’’ ট্র্যাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (ট্যাব) কৌশিক কর বলেন, ‘‘ভোট নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, দিঘা, মন্দারমণি-সহ একাধিক জায়গার বুকিং বাতিল হচ্ছে। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে এই উৎসবকে সামনে রেখেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাইছিলাম। কিন্তু ভোটের কারণে ফের বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement