এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে পড়ে রয়েছে ফাঁকা ট্রলি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য জুড়ে দফায় দফায় রেল অবরোধ, বাস ভাঙচুর, উত্তেজনার ধর্মঘটে বুধবার অস্বাভাবিক হারে রোগী কমল শহরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির বহির্বিভাগে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, আর জি কর এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে সপ্তাহের অন্য দিনের তুলনায় অন্তত দশ হাজার রোগী কম ছিল!
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ডিসেম্বরে নতুন-পুরনো মিলিয়ে এসএসকেএমের বহির্বিভাগে গড় রোগী ছিল ১০,৬১৬ জন। সেখানে এ দিন মোট রোগীর সংখ্যা ৭,৬৭৫ জন।
ডিসেম্বরে এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে গড় রোগীর সংখ্যা সাড়ে চার-পাঁচ হাজার। এই পরিসংখ্যানের উল্টো দিকে এ দিন এনআরএসের বহির্বিভাগে ২,৬২৭ জন রোগী পরিষেবা পেয়েছেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা হল ২,৩৯৩ জন। মঙ্গলবার ন্যাশনালের বহির্বিভাগে মোট রোগী ছিল ৪,৩১৯ জন। বুধবার তা কার্যত অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। মাত্র ২,১৯৫ জন। আর জি করের ক্ষেত্রেও এই পরিসংখ্যান খুব বেশি আলাদা নয় বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর।
এ দিন সকাল থেকে কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ব্যস্ততার চেনা ছবিটা চোখে পড়েনি। বিপজ্জনক স্বাস্থ্যের কারণে টালা সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধের পর থেকে আর জি কর হাসপাতালের সামনের রাস্তায় গাড়ির চাপ দ্বিগুণ বেড়েছে। বাস, গাড়ি, ট্রাকের জটে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ হাসপাতালমুখী গাড়িগুলিকে পথ করে দিতে নাজেহাল হন ট্র্যাফিক কর্মীরা। এ দিন সে সবের বালাই ছিল না।
এসএসকেএমে বাবাকে ফিজ়িক্যাল মেডিসিনের বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখানোর জন্য এসেছিলেন সুহৃদ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘অন্য সময়ে বহির্বিভাগে পৌঁছতে গেট থেকেই ভিড় ঠেলতে হয়। আজ সকালের সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি কিংবা বহির্বিভাগের মূল কাউন্টার দেখলে কে বলবে এসএসকেএম!’’
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গেটে রোগীর জটলা, রক্ষীদের সঙ্গে বচসা, ওয়াকিটকি হাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রক্ষীদের ব্যস্ততাই চেনা ছবি। এ দিন সে সব চোখে পড়েনি। ফার্মাসির এক কর্মী বলেন, ‘‘অন্য দিন চারটে পর্যন্ত ওষুধের কাউন্টারে লাইন থাকে, সেখানে দুপুরের পর থেকে ফাঁকা।’’
এনআরএস সূত্রের খবর, জেনারেল মেডিসিন এবং অর্থোপেডিক বাদ দিলে স্নায়ু, বক্ষ, প্লাস্টিক সার্জারি, সাইকায়াট্রি, ফিজিক্যাল মেডিসিনের বহির্বিভাগে দুপুরের পরে ফাঁকা হয়ে যায়। হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দুপুরেই এত কম রোগী ভাবা যায় না!’’
এ দিন স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, সরকারের নির্দেশ মতো চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা হাসপাতালে হাজির ছিলেন। অস্ত্রোপচার-সহ যাবতীয় পরিষেবাও সর্বত্র স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু রোগীর সংখ্যা যথেষ্ট কম ছিল।