সুলভ সব্জি। —নিজস্ব চিত্র
শহরজুড়ে অগ্নিমূল্য সব্জিবাজার। কিন্তু ব্যতিক্রম বাঙুরে। চলতি বাজার দরের চেয়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে এখানে সব্জি মিলছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এর পিছনে রয়েছে স্থানীয় কিছু যুবকের উদ্যোগ।
বাঙুর সুপার মার্কেটের উল্টো দিকের রাস্তায় রয়েছে এমনই এক অস্থায়ী সব্জির স্টল। বাঙুর বাজারে যেখানে পটলের দাম কিলোগ্রাম প্রতি ৩০ টাকা, সেখানে এই ভ্রাম্যমাণ সব্জির স্টলে পাবেন ১২ থেকে ১৫ টাকায়। শুধু পটলই নয়, ঝিঙে, ক্যাপসিকাম, ঢ্যাঁড়স, টম্যাটো, আলু সব কিছুই মিলছে বেশ কমেই। দিন সাতেক আগে শুরু হওয়া এই সব্জি স্টলে একটিই ফরমান, দাম কম দেখে কোনও ক্রেতা এক বারে বেশি সব্জি নিতে পারবেন না। এক বারেও এক কিলোগ্রাম বা বড়জোর দু’কিলোগ্রাম সব্জি নেওয়া যাবে।
কী ভাবে এত কম দামে এখানে সব্জি বিক্রি হচ্ছে? এই সব্জি স্টলের অন্যতম উদ্যোক্তা এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এলাকারই কিছু যুবক গ্রামে গিয়ে চাষিদের থেকে সরাসরি সব্জি কিনে আনছেন। মাঝখানে কোনও আড়তদার বা মধ্যসত্ত্বভোগী না থাকায় বেশ কম দামে সব্জি দিতে পারছি আমরা।’’
মূলত দত্তপুকুর ও মধ্যমগ্রামের চাষিদের থেকে সরাসরি সব্জি কিনে আনছেন স্থানীয় কিছু যুবক। এতে তাঁদের আয়ও হচ্ছে। এরকমই এক জন বিক্রেতা জানালেন, গত কয়েক দিনে তাঁরা দুই থেকে তিন টন সব্জি বিক্রি করেছেন। তাঁদের দাবি, আড়তদারেরা যে দামে সব্জি কেনেন তার দুই থেকে তিন টাকা বেশি দরে সেটা কিনেও চলতি বাজার দরের থেকে কমে বিক্রি করতে পারছেন।
রাস্তার ধারে দাঁড়ানো এই সব্জির স্টল থেকেই সব্জি কিনে বাঙুরের বাসিন্দা অনিন্দ্য রায় জানালেন, প্রতি দিন সব্জি কিনতে যা খরচ হয় তার থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ টাকা কম লাগল। ফলে এই স্টলের সামনে ভিড় লেগে থাকছে। এই সব্জির মানও ভাল। স্থানীয় এক ক্রেতা বলেন, ‘‘মান খারাপ হলে যত কম দামই হোক না কেন কিনব না। সরকারি আলু ১৪ টাকা কেজি দরে কিনে বাড়িতে গিয়ে দেখি অর্ধেক আলু পচা। এই স্টলে টাটকা সব্জিই মিলছে।’’ তবে এই স্টল নিয়ে বিশেষ চিন্তায় নেই বাজারের ভিতরের ব্যবসায়ীরা। এমনই এক বিক্রেতা বলেন, “ক্রেতার সংখ্যা এত বেশি যে, ওই পরিমাণ সব্জিতে সবার চাহিদা মিটবে না। তা ছাড়া ওখানে চাইলেও বেশি সব্জি কেনা যাবে না। তাই আমাদের বিক্রি তেমন কমেনি।”