স্কুলে প্লাস্টিকের বোতলে বাগান তৈরি করেছে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
পরিবেশ বাঁচাতে অপচয় বন্ধ করা দরকার। দরকার বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার। সেই ভাবনা থেকেই শহর ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৫০টি স্কুলের পড়ুয়ারা কাজ করে চলেছে।
২০১২ সালে সিইএসসি পরিবেশ সংরক্ষণে ‘ঊর্জা চেতনা’ প্রকল্পের সূচনা করে। তারা সঙ্গে পেয়েছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। সেই প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে বর্জ্যের ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে বোঝানো শুরু হয়। বিলি করা হয় তিন রঙের তিনটি করে ডাস্টবিন। প্লাস্টিক ফেলার ডাস্টবিন লাল রঙের, কাগজ ফেলার ডাস্টবিন নীল আর মিড-ডে মিলের যে বর্জ্য তৈরি হয়, তা ফেলার জন্য দেওয়া হয় সবুজ রঙের ডাস্টবিন। এক-একটি স্কুলে গড়ে প্রতিদিন কত বর্জ্য জমা হয়, তা নিয়মিত ওজন করে লিখে রাখারও ব্যবস্থা করা হয়। একই ভাবে বিদ্যুতের ব্যবহারের হিসেবও রাখতে শুরু করে পড়ুয়ারা।
হুগলির ভদ্রেশ্বরের ‘শ্যামসুন্দর চিল্ড্রেন হাইস্কুল’ এই প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক গৌতম সরকার জানালেন, তাঁর স্কুলে প্রতিদিন জঞ্জাল মাপার কাজ বা ‘ওয়েস্ট অডিট’ হয়। বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয় নিয়মিত। ফেলে দেওয়া কাগজের মণ্ড বানিয়ে তার থেকে আবার কাগজ তৈরি করে পড়ুয়ারা। তা দিয়ে পড়ুয়ারাই তৈরি করে গ্রিটিংস কার্ড। আবার মিড-ডে মিলের আনাজের খোসা, ফেলে দেওয়া অতিরিক্ত খাবার জমিয়ে তৈরি হয় গাছের সার। সেই সার দিয়ে স্কুলেই তৈরি হয়েছে তুলসী, ঘৃতকুমারীর বাগান। বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য সিইএসসি তৈরি করে দিয়েছে জলাধার।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গার্ডেনরিচের মৌলানা হসরত মোহানি মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলেও চলছে এই প্রকল্প। ওই স্কুলে প্লাস্টিকের বোতল ফেলে না দিয়ে তাতে গাছ পুঁতে বাগান করা হয়েছে। টিচার ইন-চার্জ রশিদা খাতুন জানালেন, স্কুলেই ফলানো হয়েছে ধনেপাতা, কাঁচা লঙ্কা, ছোলা, পুদিনা পাতার গাছ। সেই সবই ব্যবহার করা হয় মিড-ডে মিলের রান্নায়।
সিইএসসি-র কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) বিভাগের প্রধান নীপা সাহা শর্মা জানালেন, পড়ুয়াদের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই এই প্রকল্প চালাচ্ছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘অপচয় রোধের শিক্ষা পেলে শুধু স্কুল নয়, বাড়িতেও পড়ুয়ারা তা মেনে চলবে।’’ যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত, তাদের পূর্বাঞ্চলের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর রিমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, পড়ুয়াদের এই কাজে খুবই উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে শিখছে তারা।