প্রতীকী ছবি।
সাইবার-নিরাপত্তা নিয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করতে এ বার শিবিরের আয়োজন করছে বিভিন্ন স্কুল। শহরের বেশ কয়েকটি বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সাইবার-অপরাধ এবং সাইবার-জালিয়াতি সম্পর্কে ধারণা তৈরি করতে সেখানকার পড়ুয়াদের জন্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় থানার সহযোগিতায় সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। তবে এটুকুই যথেষ্ট নয়। এ নিয়ে নিয়মিত প্রচারের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে শিবিরের আয়োজন করা প্রয়োজন বলেও মনে করছে স্কুলগুলি।
সম্প্রতি দেশের সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনস্থ স্কুলগুলির অধ্যক্ষদের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে। সেখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি এবং সাইবার-অপরাধের খপ্পর থেকে কী ভাবে পড়ুয়াদের দূরে সরিয়ে রাখতে হবে, সে সম্পর্কে নানা দিশা দেখানো হয়।
এ শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দিনভর স্কুলের পড়াশোনা, গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়া এবং পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের চাপ থেকে কিছু ক্ষণের জন্য মুক্তি পেতে মাঠে গিয়ে খেলাধুলো নয়, তারা বেছে নিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াকে। এ ভাবেই ভুয়ো অ্যাকাউন্টের খপ্পরে পড়ছে তারা, এমনকি, ব্ল্যাকমেল পর্যন্ত করা হচ্ছে নবম থেকে দ্বাদশের কিশোর-কিশোরীদের। মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে আত্মহত্যাপ্রবণও হয়ে পড়ছে কেউ কেউ।
তিরুঅনন্তপুরমে ওই বার্ষিক সভার পরে আরও বেশি করে এ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে চাইছে বেসরকারি স্কুলগুলি। তাই পড়ুয়াদের সাইবার ক্রাইম নিয়ে সচেতন করতে স্থানীয় থানাকে সঙ্গে নিয়ে শিবিরের আয়োজন করেছে শহরের বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল।
যেমন, বাগুইআটির ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা জানিয়েছেন, বাগুইআটি থানা থেকে সাইবার-সচেতনতা নিয়ে ইতিমধ্যেই সেখানে শিবির হয়েছে। শিবিরে মূলত সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের সাইবার-অপরাধ সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। কারণ দেখা গিয়েছে, অষ্টম-নবম শ্রেণি থেকেই পড়ুয়াদের সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তি বাড়ে। তাই আগেই তাদের সচেতনতার পাঠ দিতে চাইছে স্কুল। মৌসুমীর কথায়, ‘‘এখন পড়ুয়াদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের ফলোয়ার নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। ফলোয়ার কম হলে অবসাদের কথাও শুনেছি। এমনকি, টাকা দিয়ে ফলোয়ার বাড়ানোর চেষ্টা করে পড়ুয়ারা!’’ ফিউচার ফাউন্ডেশনের অধ্যক্ষ রঞ্জন মিত্র বলেন, ‘‘ভুয়ো অ্যাকাউন্টের পাল্লায় পড়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। অতিমারির সময় থেকে পড়ুয়াদের মধ্যে এই আসক্তি বেড়েছে। তাই থানার সঙ্গে কথা বলে স্কুলে এই নিয়ে সচেতনতা-শিবির করেছি। শিবিরের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।’’ রামমোহন মিশন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। সাইবার-সচেতনতা নিয়ে পর পর বেশ কয়েকটি শিবির করব।’’