ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে পড়ে যাওয়া গাছ নতুন করে প্রতিস্থাপিত হচ্ছে রবীন্দ্র সরোবরে। —ফাইল চিত্র
ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপড়ে গিয়েছে বহু গাছ। সবুজের ক্ষতি হয়েছে বিস্তর। সেই ক্ষতি কী ভাবে পূরণ করা যায়, তা দেখতে বলেছেন রাজ্যপাল। বলেছেন শিক্ষামন্ত্রীও। তার পরেই ওই কাজে উদ্যোগী হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি।
রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে ৪৭৮টি বিএড কলেজ। ইতিমধ্যেই উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজগুলিকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, প্রত্যেক পড়ুয়াকে যেন পাঁচটি করে গাছের চারা দেওয়া হয়। পড়ুয়ারা তাঁদের পছন্দের জায়গায় সেগুলি পুঁতবেন।
বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বেশ কিছু গাছ পড়ে গিয়েছে। উপাচার্য জানালেন, তার মধ্যে শিরীষ, মেহগনির মতো গাছও রয়েছে। তাঁরা এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটির সঙ্গে কথা বলে গাছগুলিকে আবার বসানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়েছে বেশ কিছু গাছ। ডিরোজিয়ো হলের কাছে বড় রাবার গাছটি পড়ে গিয়েছে। ‘স্টুডেন্টস জ়োন’-এর বটগাছের একাংশও ভেঙে পড়েছে। পড়ে গিয়েছে একটি আমগাছও। হিন্দু হস্টেলের আমগাছটিও উপড়ে পড়েছে। রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্সিতে সারা বছরই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলে। আমপানের ক্ষয়ক্ষতি দেখে তাঁরা গাছগুলির সংরক্ষণ এবং আরও গাছ রোপণে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের হানায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও সবুজের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। ক্যাম্পাসে পড়ে গিয়েছে ১৮১টি গাছ। সল্টলেক ক্যাম্পাসে পড়েছে ৩৯টি। পড়ে যাওয়া গাছগুলিকে বাঁচানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নতুন গাছ লাগানোর ব্যাপারেও চলছে পরিকল্পনা। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি কমিটি। যার চেয়ারম্যান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আশিস মজুমদারকে। আশিসবাবু জানালেন, ক্যাম্পাসে মূলত পড়েছে মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া ও গুলমোহর গাছ। মোট গাছের অন্তত ১০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন গাছগুলির সংরক্ষণ করার। রাস্তার ধারে পড়ে যাওয়া গাছের সংরক্ষণে সমস্যা বেশি। কারণ, সংরক্ষণের জন্য যে জায়গা দরকার, সেখানকার ছোট পরিসরে তা পাওয়া কঠিন।
‘ন্যাশনাল অ্যাফরেস্টেশন ইকো ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’-এর আঞ্চলিক কোঅর্ডিনেটর আশিসবাবু মনে করিয়ে দিলেন, গাছ শুধু পুঁতলেই হবে না। একটি গাছের সঙ্গে আর একটি গাছের দূরত্ব বজায় রেখে গাছ লাগাতে হবে। না-হলে গাছ ঠিক মতো বেড়ে উঠতে পারবে না।