অকুস্থল: কাঁকুড়গাছির এই দোকানের সামনেই উত্তম বাকুলি নামে এক ব্যক্তি স্ত্রীকে খুন করে বলে অভিযোগ। বুধবার সেখানে বসেছে পুলিশি পাহারা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
স্ত্রীকে খুনের দাবি করে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করা কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা, বছর ছাপ্পান্নর উত্তম বাকুলি গ্রেফতার হয়েছিল আগেও। ২০১৪ সালে তাকে গ্রেফতার করে বড়তলা থানার পুলিশ। এক মূক-বধির মহিলাকে জোর করে গাড়িতে তুলে ধর্ষণের চেষ্টার সেই মামলায় তাকে জেলও খাটতে হয়। তাকে গ্রেফতার করা পুলিশকর্মীদের পুরষ্কৃত করা হয়েছিল লালবাজার থেকে। পরে উত্তম জামিন পেলেও ওই মামলার বিচার এখনও চলছে।
ভরসন্ধ্যায় কাঁকুড়গাছি রোডে প্রকাশ্য রাস্তায় স্ত্রীর গলায় ছুরি চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উত্তমের বিরুদ্ধে। ওই কাণ্ড ঘটিয়ে সে নিজেই থানায় গিয়ে রক্তমাখা ছুরি জমা দিয়ে স্ত্রীকে খুন করেছে বলে দাবি করে। সে নিজেও কীটনাশক খেয়েছে বলে জানায়। দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ।
এর পরেই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ২০১৪ সালে তার গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা। ওই বছর মে মাসের শুরুর দিকে বিডন স্ট্রিট এবং যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে বড়তলা থানার টহলদারি ভ্যানে থাকা পুলিশকর্মীরা একটি গাড়ির সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ করেন। সেই গাড়িটি চালাচ্ছিল বাপি দাস নামে এক ব্যক্তি। তার সঙ্গেই ছিল উত্তম। গাড়িটি পুলিশ দাঁড় করাতেই ওই মহিলাকে ঠেলে নামিয়ে গাড়ি নিয়ে পালাতে যায় বাপি ও উত্তম। ধৃতেরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে জানায়, গিরিশ পার্ক যেতে চেয়ে মহিলা নিজেই গাড়িতে উঠেছিলেন। কিন্তু মহিলার অবস্থা দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তারা তিন জনকেই বড়তলা থানায় নিয়ে যায়।
সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে, ওই মহিলা মূক-বধির। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। কাঁকুড়গাছির একটি বস্তিতে সন্তান এবং ভাইকে নিয়ে থাকেন। বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। ওই বস্তির পাশেই থাকত উত্তম এবং বাপি। ঘটনার সন্ধ্যায় কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ওই মহিলা। অভিযোগ, মানিকতলা মেন রোড এবং বাগমারি রোডের মধ্যে এক জায়গায় তাঁর পথ আটকায় ওই দু’জন। তার পরে তাঁকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। সেই সময়ে মহিলার কথা বুঝতে ডাকা হয়েছিল এক জন ইন্টারপ্রিটারকে। মহিলাকে উদ্ধারের জন্য বড়তলা থানার তৎকালীন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর রবীন্দ্রনাথ দত্তের পাশাপাশি জীবনচন্দ্র সরকার, সুদীপলাল পোদ্দার এবং সোমা দাস নামে তিন কনস্টেবলকে পুরস্কৃত করে লালবাজার।