হাওড়া স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। —ফাইল চিত্র।
নগদে লেনদেন ছাড়াই ইউপিআই-নির্ভর ব্যবস্থার মাধ্যমে শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনে অসংরক্ষিত শ্রেণির টিকিট কাটার ব্যবস্থা চালু করেছে রেল। নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে রেলের নিজস্ব বুকিং কাউন্টার ছাড়াও স্বয়ংক্রিয় টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার ঝক্কি অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে রেল। প্রাথমিক ভাবে সারা দেশে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে ওই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। তারই অঙ্গ হিসাবে শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করা হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর।
এই নয়া ব্যবস্থায় টিকিট কাটার প্রক্রিয়াটি কার্যত স্পর্শহীন (কনট্যাক্টলেস) ব্যবস্থা হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এতে স্টেশনের বুকিং কাউন্টার থেকে অসংরক্ষিত টিকিট কাটার সময়ে যাত্রী তাঁর গন্তব্য স্টেশনের নাম বললে সেই অনুযায়ী টিকিট প্রিন্ট করার জন্য যন্ত্রকে নির্দেশ দেবেন কাউন্টারে বসে থাকা রেলকর্মী। এর পরে ওই যাত্রী ইউপিআই ব্যবস্থার মাধ্যমে টিকিটের মূল্য মেটাতে চাইলে কাউন্টারে যাত্রীদের দিকে মুখ করে বসানো বিশেষ মনিটরে একটি কিউআর কোড ভেসে উঠবে। নিজের ইউপিআই অ্যাপ থেকে যাত্রী সেটি স্ক্যান করে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করলেই রেলের কাছে টিকিটের মূল্য বাবদ অর্থ পৌঁছে যাবে। এর পরেই টিকিট প্রিন্ট করা যাবে। নতুন এই ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশনে চালু হয়ে গিয়েছে। যা শিয়ালদহের যাত্রীদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে বলে খবর।
এই ব্যবস্থায় যে কোনও ইউপিআই অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটা যাবে। এমনকি, স্বয়ংক্রিয় টিকিট ভেন্ডিং মেশিনেও এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কিউআর কোড তৈরি করা যাবে। ফলে যাত্রীদের আর প্রিপেড কার্ড বা রেলের মোবাইল ওয়ালেট ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না। নতুন ব্যবস্থায় কাউন্টারে নগদ লেনদেনের প্রয়োজন না থাকায় যাত্রীদের খুচরো টাকা ফেরত দেওয়া সংক্রান্ত জটিলতাও বহুলাংশে কমবে বলে মনে করছে রেল। যাত্রীরাও স্টেশনের যে কোনও বুকিং কাউন্টারে গিয়ে দ্রুত দাম মিটিয়ে টিকিট কিনতে পারছেন বলে খবর। রেল সূত্রের খবর, ধাপে ধাপে সারা দেশের সব স্টেশনেই এই ইউপিআই ব্যবস্থা চালু করতে চায় রেল। সর্বত্র এটি চালু হলে কাউন্টারে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা মেটানো এবংঅবশিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে যাত্রীদের সমস্যা অনেকটাই কমবে। অতীতে এ ভাবে টিকিট কাটার ক্ষেত্রে যাত্রীদের নিজস্ব ইউপি আইডি ভাগাভাগি করার প্রয়োজন পড়ত। নতুন ব্যবস্থায় ওই আইডি ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না।