সল্টলেকে ‘নির্মল বাংলা অভিযান’। শনিবার। — নিজস্ব চিত্র।
স্বাধীনতা দিবসে পাড়ায় নানা অনুষ্ঠানে থাকতেই হয় তাঁদের। এর উপরে দলনেত্রীর নির্দেশ ছিল এ দিনই দুপুর ১২টার পর থেকে ঝাঁটা হাতে সামিল হতে হবে নির্মল বাংলা অভিযানে। স্বভাবতই ইচ্ছে তেমন না থাকলেও শনিবার ঝাঁটা হাতে নামতে হয়েছিল তৃণমূলের সব কাউন্সিলরকেই। আর ওই অভিযান সফল করতে শুক্রবার পুর-প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও এক ওয়ার্ডে যেতে পারেন। তাই দুপুর ১২টায় ঝাঁটা হাতে নিজেদের ওয়ার্ডে তৈরি ছিলেন অনেকেই।
কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টা বাজতেই তাঁদের অনেকে ঝাঁটা গুটিয়ে যোগ দিয়েছেন ওয়ার্ডের নানা অনুষ্ঠানে। পূর্ব কলকাতার বেলেঘাটা থেকে মধ্য কলকাতার ধর্মতলা চত্বরে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে দেখা গিয়েছে আধ ঘণ্টার মধ্যেই সব ফাঁকা। নজরে পড়েছে ঝাঁটা হাতে জনা কয়েক ১০০ দিনের কর্মীকে। দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি ওয়ার্ডের হালও একই। দুপুর পৌনে একটায় গিয়ে দেখা গেল, গড়িয়াহাটের নির্মল বাংলা অভিযান শেষ হয়ে গিয়েছে। রাসবিহারী কানেক্টরে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঝাঁটা হাতে দেখা গিয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে। উত্তর কলকাতার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মুচিবাজারে নির্মল বাংলা অভিযানে ঝাঁটা নিয়ে রাস্তা সাফাইয়ে যোগ দেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্য রাউত। সেখানে বৃক্ষরোপণও হয়েছে। মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে হাজির ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্য অবশ্য নির্মল বাংলা অভিযানের নামে কাউন্সিলরদের ঝাঁট দেওয়াকে ভড়ংবাজি বলে মনে করছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংযোজিত কলকাতার অনেক ওয়ার্ডে সাফাইকর্মীর অভাব। ঠিকমতো জঞ্জাল পরিষ্কার হয় না। দু’-একটি ওয়ার্ড বাদ দিয়ে অনেক জায়গাতেই কম্প্যাক্টর মেশিন নেই।’’ মেয়র ও মেয়র পারিষদদের দিয়ে এক দিনের নির্মল বাংলা করে কোনও লাভ হবে না বলেই তিনি মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এর জন্য ধারাবাহিক কর্মসূচি দরকার। যা সরকারের কাজ। মেয়র বা মেয়র পারিষদ ঝাঁটা হাতে নামলেই কাজ হয়ে যাবে না।’’
দক্ষিণ কলকাতার ৭০, ৮৬ এবং ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলরেরা এ দিন ঝাঁটা হাতে সাফাইয়ের কাজে সামিল হলেও নির্মল বাংলা অভিযান বলে মনে করেন না। তাঁদের কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচি ধার করেছে বাংলার সরকার। আসলে স্বচ্ছ না হলে তো নির্মল হওয়া যায় না।
এ দিন সকালে পুরভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। হাজির ছিলেন পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়ও। পরে তাঁরা যোগ দেন রেড রোডে সরকারের মূল অনুষ্ঠানে।