—প্রতীকী ছবি
দীর্ঘ লকডাউন পর্বে যানবাহন বন্ধ থাকায় অন্য গণ পরিবহণের মতোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ শহরের হলুদ ট্যাক্সির চালকেরা। আনলক পর্বে পরিবহণের চাকা গড়ালেও ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ডিজ়েলের দাম। গত কয়েক মাসে সেই দাম লিটার প্রতি প্রায় ১৩ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রমাদ গুনছেন ওই ট্যাক্সির চালকেরা। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের সে ভাবে দাম না বাড়লেও ডিজ়েলের দাম যে ভাবে বেড়েছে, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ তাঁরা। সেই ক্ষোভ উস্কে দিয়েই রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে এ বার আন্দোলনে পথে নামছে এআইটিইউসি-র ট্যাক্সিচালক সংগঠন ।
বামপন্থী ওই সংগঠন আগামিকাল সোমবার, হিন্দ সিনেমা সংলগ্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) অফিসে বিক্ষোভ দেখাবে। দুপুর ১২টার পর থেকেই ট্যাক্সিচালকেরা জড়ো হবেন রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে। সেখান থেকেই মিছিল করে আইওসি-র দফতরের সামনে বিকেল পর্যন্ত অবস্থান এবং বিক্ষোভ দেখাবেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে সংগঠনের ট্যাক্সি ইউনিয়নের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, “তেলের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে চলেছে। এই মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানা না গেলে ভাড়া বাড়িয়েও সমস্যার সমাধান হবে না। মরিয়া হয়ে তাই ট্যাক্সিচালকেরা প্রতিবাদ জানাতে পথে নেমেছেন।”
করোনা পরিস্থিতিতে পরিবহণ শিল্পের সঙ্কট গভীরতর হওয়ায় ট্যাক্সিচালকদের পাশাপাশি অ্যাপ-ক্যাব চালকদের নিয়ে পরদিনই যৌথ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে ওই বামপন্থী সংগঠন। ডিজ়েলের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ট্যাক্সির ভাড়া বৃদ্ধির ডাক দিয়েছে ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’। ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে ভাড়া বৃদ্ধির দাবির কথা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিমল গুহ। ভাড়া না বাড়লে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ৭২ ঘণ্টা ট্যাক্সি ধর্মঘটের পথে যাবেন বলে ইতিমধ্যেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন।
শাসকদল তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়ন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ট্যাক্সি চালকদের সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেন’স অ্যাসোসিয়েশন’ও ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধিতে চালকদের সমস্যার কথা জানিয়েছে। তবে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দে বলেন, “মানুষের উপরে যাতে বোঝা না চাপে, তাই আমরা ভাড়া বাড়ানোর কথা বলছি না। আশা করছি, পরিবহণ শিল্পের সঙ্কটের কথা বুঝেই সরকার ট্যাক্সিচালকদের পাশে থাকবে।” দূরপাল্লার ট্রেন সে ভাবে এখনও চালু না হওয়ায় শিয়ালদহ, হাওড়ার মতো স্টেশনে প্রি-পেড বুথে ট্যাক্সিচালকেরা আগের মতো যাত্রী পাচ্ছেন না। এটাও বড় সঙ্কট বলে তাঁর দাবি।