যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে এক ছাত্রকে ‘পীড়নের’ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার মিতালি দেব শুক্রবার কর্তৃপক্ষের কাছে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তাতে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে দিয়ে ল্যাপটপ চুরি সংক্রান্ত বিষয়ে মুচলেকা লেখানো এবং তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে হস্টেলের ছাত্রদের একাংশের বাধা দেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াড এবং মেন হস্টেলের সুপার প্রমুখের কাছেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
এক ছাত্রের ল্যাপটপ চুরি যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার রাতে যাদবপুরের মেন হস্টেলের সিডি ব্লকে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে ঘিরে কার্যত সালিশি সভা বসেছিল বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য এখনও পর্যন্ত ঘটনাটিকে র্যাগিং বলে মানতে নারাজ। তবে, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়ে সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখছেন যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। যাদবপুরের অস্থায়ী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত এখন দিল্লিতে। তিনি ফেরার পরে সোমবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ছাত্রছাত্রীদের একাংশ অবশ্য এই ঘটনাটিকে র্যাগিং বলে দাবি করে এখনই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর তরফেও বিবৃতি দিয়ে এ দিন পড়ুয়াদের একাংশের অসহিষ্ণুতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। এক বছর আগে মেন হস্টেলের তেতলা থেকে নীচে পড়ে গিয়ে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়গুলি নিয়ে ক্ষুব্ধ ছাত্র ও শিক্ষকদের বড় অংশ।
হস্টেলে যে ছাত্রটি হেনস্থার শিকার বলে অভিযোগ, তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে তাঁর বাবা সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন। ছেলেকে কলকাতায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে তিনি পুরুলিয়ায় বাড়ি ফিরেছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে ছুটির পরে ছেলেকে কলকাতায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে এসেছি। ক’টা দিন যাক। ছেলে ধাতস্থ হোক। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলবে। তার পরে যেমন চাইবে, তেমনটাই হবে। পড়াশোনা তো করতেই হবে।’’
ওই ছাত্র আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসবেন বলে কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছেন। তবে, ওই ছাত্র কবে ফিরছেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এ দিকে, ছেলের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা নিয়ে কোথাও অভিযোগ করা প্রসঙ্গে তাঁর বাবা বলেন, ‘‘ছেলে সুস্থ আছে। কোথাও অভিযোগ করার কথা ভাবছি না।’’