মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুলের কাজ শেষ করতে হবে মার্চের মধ্যে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়েও কাজ শেষ হবে না বলেই মনে করছেন কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র কর্তারা। তাঁরা বলছেন, মার্চ থেকে সময়সীমা বাড়িয়ে অগস্ট করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, অগস্টের মধ্যে ওই উড়ালপুলের কাজ শেষ করতে হলে রাতে অন্তত ১০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। তার জন্য হাওড়া থেকে পোস্তা হয়ে শহরে ঢোকা গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে অগস্টের মধ্যে এই কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। কেএমডিএ-র এক কর্তা বলেন, ‘‘এ বিষয়টি জানিয়ে কলকাতা পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’
গত বছর মুখ্যমন্ত্রী পোস্তা ব্যবসায়ী সমিতির জগদ্ধাত্রী পুজোর অনুষ্ঠানে এসে মার্চ মাসের মধ্যে উড়ালপুল চালু করার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে পোস্তা এলাকার বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই এই উড়ালপুলের কাজ আটকে রয়েছে। ফলে গাড়ির জট বাড়ছে, অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলিও এ নিয়ে কার্যত নীরব। শেষে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বটে, কিন্তু মার্চ মাসের দশ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।
আরও পড়ুন- কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে রাজ্যকে কড়া বার্তা কমিশনের
কেএমডিএ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই প্রশাসনের সর্বস্তরে তৎপরতা শুরু হয়। গোড়ার দিকে রাত সাড়ে ১১টা থেকে প্রথম দিকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কাজ হচ্ছিল। ভোরের দিকে পোস্তার পাইকারি বাজারে একের পর এক গাড়ি ঢুকতে থাকায় পরের দিকে ভোর ৬টার মধ্যে কাজ শেষ করে দিতে হচ্ছিল। সংস্থার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এই কারণেই আমরা রোজ রাতে দশ ঘণ্টা কাজ করার সময় চেয়েছি। বলেছি, প্রয়োজনে হাওড়া থেকে আসা গাড়ি মল্লিকঘাট ফুলবাজারের সামনের রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হোক।’’
কেএমডিএ যে সময় বেশি চেয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে, পোস্তা বাজার পূর্ব ভারতের খুব বড় পাইকারি বাজার। আলু, পেঁয়াজ, মশলা, গুড়, চিনি, ভোজ্যতেল সব কিছুই এই বাজার থেকে বিভিন্ন রাজ্যে এবং জেলায় যায়। ফলে রোজই বহু গাড়ি থেকে এখানে মাল খালাস যেমন হয়, তেমনই গাড়িতে মাল বোঝাইও হয়। কলকাতার রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের সময়ও রাতেই। ফলে ওই এলাকায় রাতে দীর্ঘ ক্ষণ গাড়ি বন্ধ রাখা সমস্যার। গাড়ি ঘুরিয়ে দিলেও সমস্যা হতে পারে। তবে কাজের জন্য রাস্তার এক দিকে পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। সব দিক দেখে শীঘ্রই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’