Bowbazar

Bowbazar: বৌবাজারে বিপজ্জনক দু’টি বাড়ি দ্রুত ভাঙতে চায় মেট্রো, কিন্তু জটিলতা অব্যাহত

২৫টি বাড়ির মধ্যে ১৬ এবং ১৬/১ বাড়ি দু’টির অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। কবে ভাঙা হবে সেগুলি? জানেন না বাসিন্দারা। ১৬/১ নম্বরের বাসিন্দা ৭৪ বছরের রাজলক্ষ্মী সেন বলেন, ‘‘এটা আমার শ্বশুরের বাড়ি। এ বাড়ি থেকে কোনও জিনিস বার করতে পারিনি। এখন ভেঙে ফেলবে বলছে। কোথায় যাব, জিনিসপত্র নিয়ে কী করব, জানি না। কবে কী করবে, তা-ও জানি না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২২ ১৫:২৮
Share:

ছবি: পিটিআই।

বৌবাজারে ফাটল ধরা দু’টি বাড়ির অবস্থা বিপজ্জনক হলেও তা ভাঙা নিয়ে জটিলতা অব্যাহত। ওই বাড়িগুলি যে কোনও সময় ধসে যেতে পারে বলে আশঙ্কা মেট্রো কর্তৃপক্ষের। ফলে রবিবারই সে দু’টি বা়ড়ি ভাঙার কাজ শুরু হবে বলে দাবি তাঁদের। তবে তা কি আদৌ করা সম্ভব? বাসিন্দাদের একাংশের পাল্টা দাবি, এ বিষয়ে তাঁদের অন্ধকারে রেখেছেন মেট্রোকর্তারা। বাড়ির ভিতরে এখনও তাঁদের জিনিসপত্র রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারাও অন্যত্র সরে যাননি। ফলে এ নিয়ে এখনও জট কাটেনি।

২০১৯ সালে মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলাকালীন বৌবাজারের বহু বাড়িতে ফাটল ধরে, তার মধ্যে অনেকগুলি ভেঙেও পড়ে। সে সময় ২৩টি বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি আবারও বহু বাড়িতে ফাটল ধরায় আরও দু’টি বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোকর্তারা। ওই ২৫টি বাড়ির মধ্যে ১৬ এবং ১৬/১ বাড়ি দু’টির অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। কবে ভাঙা হবে সেগুলি? জানেন না বাসিন্দারা। ১৬/১ নম্বরের বাসিন্দা ৭৪ বছরের রাজলক্ষ্মী সেন বলেন, ‘‘এটা আমার শ্বশুরের বাড়ি। এ বাড়ি থেকে কোনও জিনিস বার করতে পারিনি। এখন ভেঙে ফেলবে বলছে। কোথায় যাব, জিনিসপত্র নিয়ে কী করব, জানি না। কবে কী করবে, তা-ও জানি না।’’

Advertisement

রবিবার সকালে বৌবাজারের দুর্গা পাতুরি লেনে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) কর্তৃপক্ষ। তাতে পুরসভার তরফে উপস্থিত ছিলেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। ছিলেন কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী তথা চৌরঙ্গির বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়।

রবিবারের বৈঠকে কেএমআরসিএল-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দ্রনাথ ঝা জানান, যে বাড়িগুলি ভাঙা হবে, সেগুলির এক জন করে বাসিন্দাকে সঙ্গে নিয়ে ভিডিয়োগ্রাফি করে বাড়ির জিনিসপত্র নিয়ে রাখা হবে বাগবাজারে মেট্রোর গুদামঘরে। এ ছাড়া, এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইআইটি রুরকিকে। ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্বরূপ। তাঁর দাবি, শনিবারই মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন যে এখানকার ফাটল ধরা বাড়িগুলির অবস্থা নিয়ে সমীক্ষা করে একটি রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের। তা হলে আরও একটি সমীক্ষা কেন করা হবে? প্রশ্ন কাউন্সিলরের। তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘যদি যাদবপুর এবং রুরকির দু’টি রিপোর্টে অমিল হয়, তা হলে কী হবে?’’ এ নিয়ে মেট্রোকর্তাদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয় তাঁর। তবে কেএমআরসিএল-র দাবি, বৌবাজারে মেট্রোর ‘গোটা প্রকল্প’ নিয়েই সামগ্রিক রিপোর্ট দেবেন আইআইটি রুরকির বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

বৈঠকে মেট্রোকর্তাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার বহু বাসিন্দা। অভিজিৎ মোতিলাল নামে ৭২ বছরের এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘যে দিন বাড়িতে ফাটল ধরেছিল, মেট্রোর কোনও কর্তা দেখতে আসেননি। আগের বার লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি সারিয়েছি। এ বার মুচিপাড়া থানা থেকে আমাদের বাড়ি খালি করতে বলা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement