সেতু নির্মাণ নিয়ে রেল ও রাজ্যের মধ্যে সংঘাত অব্যাহত। —নিজস্ব চিত্র।
এক বছর অতিক্রান্ত। কবে মাঝেরহাট ব্রিজের কাজ শেষ হবে, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। উল্টে সেতুর ভবিষ্যৎ রেল ও রাজ্যের মধ্যে চিঠি চালাচালিতেই আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকে চরম ভোগান্তিতে দক্ষিণ কলকাতা এবং শহরতলির বাসিন্দারা। রেল ও রাজ্যের মধ্যে সংঘাতের জেরে সেতু নির্মাণের সময়সীমা বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠতেই শহবাসীর ক্ষোভ বাড়ছে।
২০১৮-র ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ে। ওই সময় রেলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, মাঝেরহাটের কাছে মেট্রো রেলের কাজে পাইলিংয়ের কারণে সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা নাকচ করে দেয় রেল। সেতুর রক্ষনাবেক্ষণ নিয়েও অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পর্ব চলেছে দীর্ঘ দিন।
দুর্ঘটনার পর ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই সেতু নতুন করে তৈরির সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল রাজ্য। পরে তা পিছিয়ে ডিসেম্বর করা হয়। কিন্তু তার মধ্যেও কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান প্রশাসনিক কর্তারা। এই পরিস্থিতিতে উদ্যোগী হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেললাইনের উপরে থাকা সেতুর অংশে ‘সুপার স্ট্রাকচার’ তৈরি করতে ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’র ছাড়পত্র এখনও মেলেনি বলে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে চিঠি লিখেছেন তিনি।
চিঠি চালাচালিতেই আটকে মাঝেরহাট সেতুর ভবিষ্যৎ।
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনে ফের পাথরের ঘায়ে রক্ত ঝরল মহিলা যাত্রীর, প্রশ্নের মুখে যাত্রী নিরাপত্তা
রেল অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। পাল্টা চিঠি দিয়ে তারা জানিয়েছে, সেতু তৈরির জন্যে বেশ কিছু বিষয়ে রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ফলে ‘সুপার স্ট্রাকচার’-এর জন্যে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়া যাচ্ছে না।
মাঝেরহাট ব্রিজের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: অজিতের সঙ্গে হাত মেলানোই কাল হল! বিজেপির অন্দরে দোষারোপের পালা
রেল-রাজ্য একে অপরের দিকে আঙুল যখন তুলছে, তখন মাঝেরহাট ব্রিজ নতুন করে কবে চালু হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর আগেও মাঝেরহাট সেতুর নকশা তৈরির সময়ে রেলের অনুমোদন সময় মতো পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ ছিল রাজ্যের। এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, নকশার পরিমার্জন হলেও সময়মতো কাজ শুরু করা যায়নি রেলের ছাড়পত্রের জন্য। রাজ্য দ্রুত কাজ শেষ করতে চাইছে। আগে যে সমন্বয়ের অভাব ছিল, এ বার যেন তা না হয়। হয়তো সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে সবিস্তার জানিয়েছেন রেলমন্ত্রীকে।