শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানিয়েছিলেন, তিনি ইতিমধ্যেই ইউজিসির ১২টি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। —ফাইল চিত্র।
র্যাগিং নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে আবার ব্যাখ্যা চাইবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গত শনিবারই ইউজিসির ১২টি প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৩১টি ফাইলে সেই জবাব পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। কিন্তু সোমবার ইউজিসির চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমার একটি সাক্ষাৎকারে সিএনএন-নিউজ১৮কে জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফার জবাবেও সন্তুষ্ট নন তাঁরা। তাই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি লিখতে চলেছে তারা। সে ক্ষেত্রে যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় বার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছবে ইউজিসির ‘প্রশ্নমালা’।
গত শুক্রবারই দ্বিতীয় বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জবাব তলব করেছিল ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে র্যাগিং প্রসঙ্গে ১২টি প্রশ্নের জবাব চেয়ে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছিল ইউজিসির তরফে। উত্তর দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দিয়েছিল ইউজিসি। সেই চিঠি পেয়েই রিপোর্ট তৈরি করে পাঠান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বলেছিলেন, ‘‘আমরা ৩১টি ফাইলে পাঠিয়েছি। তবে সন্তুষ্ট কি না, তা ওঁরা বলবেন।’’ সোমবার সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর মিলল ইউজিসির প্রতিক্রিয়া। স্বয়ং ইউজিসির চেয়ারম্যানই জানিয়ে দিলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া দ্বিতীয় দফার রিপোর্টেও তাঁরা সন্তুষ্ট নন।
ওই সাক্ষাৎকে এম জগদেশ বলেছেন, ‘‘র্যাগিং একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পড়ুয়াদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতেই হবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে। এ ব্যাপারে ইউজিসির সমস্ত বিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। খুব শীঘ্রই আবার ইউজিসি চিঠি লিখবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। তাতে আরও ব্যাখ্যা চাওয়ার পাশাপাশি, কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তার বিশদও জানতে চাওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান। এ দিকে, শনিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানিয়েছিলেন, ইউজিসির প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য শনি-রবিবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে তাঁকে। এর আগে দুর্ঘটনার পরের চার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসা প্রসঙ্গে নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু। ইউজিসি আবার তাদের ‘প্রশ্নমালা’ পাঠালে তাঁর চাপ নিঃসন্দেহে আরও বাড়বে। তবে এ নিয়ে সোমবার আর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। পরের দিন হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তার। বাংলা বিভাগের ওই ছাত্রের বাড়ি নদিয়ায়। দিন কয়েক আগেই যাদবপুরের মেন হস্টেলের এ২ ব্লকে এক আবাসিকের ‘অতিথি’ হিসাবে থাকতে শুরু করেছিল সে। পুলিশের রিপোর্টে জানা যায়, হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে কোনও ভাবে পড়ে গিয়েছিল সে। এই ঘটনায় ছাত্রটির পরিবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ আনে হস্টেল আঁকড়ে পড়ে থাকা প্রাক্তন ছাত্রদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জবাব চেয়েছে ইউজিসিও।