প্রতীকী ছবি।
ইন্টারনেটে ‘বান্ধবী’ খুঁজতে গিয়ে জালিয়াতদের খপ্পরে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি। নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করতে গিয়ে গচ্চা দিয়েছিলেন বহু হাজার টাকা। শেষমেশ আর কোনও উপায় না দেখে দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুলিশে। বুধবার রাতে ফাঁদ পেতে সোনারপুর স্টেশন চত্বর থেকে অভিযুক্ত দুই যুবতীকে ধরে ফেলল পুলিশ। ধৃতদের নাম ঋতু চক্রবর্তী ও শান্তা মুখোপাধ্যায়। তারা টালিগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী ব্যক্তি সোনারপুর থানা এলাকার তেঘরিয়ার বাসিন্দা। চাকরি করেন এক বহুজাতিক সংস্থায়। ‘বান্ধবী’ পেতে ইচ্ছুক জানিয়ে একটি ওয়েবসাইটে আবেদন করেছিলেন তিনি। সেই আবেদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর মোবাইলে এক যুবতীর ফোন আসে। সেই যুবতী তাঁকে ‘সঙ্গ দিতে’ রাজি জানিয়ে দক্ষিণ কলকাতার এক জায়গায় আসতে বলে। অভিযোগকারী জানান, তিনি ওই যুবতীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। অভিযোগ, এর কয়েক দিন পরেই ওই যুবতী ফোন করে জানায়, সে ওই ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর স্ত্রীর নম্বর সংগ্রহ করেছে। আপাতত ৫০ হাজার টাকা না দিলে তাঁর স্ত্রীকে সব কিছু জানিয়ে দেবে সে। ফোনের কথোপকথন ও সাক্ষাতের ভিডিয়ো রেকর্ডিং তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।তদন্তকারীরা জানান, ভয় পেয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি জায়গায় গিয়ে সেই যুবতীকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
কিন্তু বিষয়টি সেখানেই থামেনি। সপ্তাহখানেক পরে আবার ফোন আসে। এ বার ২০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। সেই টাকাও দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এর পরে দিন চারেক আগে ওই যুবতী আবার ফোন করে এক লক্ষ টাকা দাবি করে। সোনারপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যক্তি। পুলিশের পরিকল্পনা মতো এ বার ওই যুবতীকেই পাল্টা টোপ দেওয়া হয়। ওই ব্যক্তিকে দিয়ে তাকে ফোন করানো হয়। বলা হয়, তিনি টাকা দিতে রাজি। বুধবার রাতে সোনারপুর স্টেশন চত্বরে এসে যেন সে মোবাইলে ফোন করে। রাজি হয়ে যায় ওই যুবতী।
আরও পডু়ন: সরকারি কর্মীদের কাজে মন নেই, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
আরও পডু়ন: ধনখড়ের কাজকে ‘বাড়াবাড়ি’ বলছেন মমতা
তদন্তকারীরা জানান, রাত আটটা নাগাদ দুই যুবতী সোনারপুর স্টেশন রোড এলাকায় হাজির হয়। আগে থেকেই সেখানে সাদা পোশাকে তৈরি ছিলেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। ওই ব্যক্তির কাছে দুই যুবতী আসতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বাড়ি টালিগঞ্জ থানা এলাকায়। তাদের সঙ্গে এই চক্রে আরও কয়েক জন মহিলা রয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। পুলিশ জেনেছে, ‘বন্ধুত্ব’ পাতানোর বিজ্ঞাপন দিয়ে একটি ওয়েবসাইট খুলেছে ওই যুবতীরা। যাঁরাই সেখানে আবেদন করেন, তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নিয়ে সব কিছু ‘ফাঁস’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করত এরা। গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে অনেকেই তাদের ফাঁদে পড়েছেন। ওই দুই যুবতীকে জেরা করা
হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। খোঁজ করা হচ্ছে তাদের সহযোগীদের। টালিগঞ্জ এলাকায় ধৃতদের একটি অফিস রয়েছে বলেও জেনেছে পুলিশ।