শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ছোট্ট এই শিশুর। নিজস্ব চিত্র।
গরম ভাতের হাঁড়িতে পড়ে গুরুতর জখম হয়েছিল শিশুটি। গত ১০ অগস্ট থেকে সে ভর্তি ছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। শনিবার সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তার।
শিশুটির বয়স দু’বছর তিন মাস। তার মুখ, ডান হাত এবং শরীরের ডান দিক সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের কাছে শিশুটির বাবা-মা অভিযোগ করেছিলেন, এক ভাড়াটে গরম ভাতের হাঁড়ির উপরে তাঁদের মেয়েকে বসিয়ে দিয়েছিলেন। ভাড়াটের দাবি, মেয়েটি খেলতে খেলতে নিজেই পড়ে গিয়েছিল।
দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে গত ১৪ অগস্ট মঙ্গলবার উল্টোডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ করে। অভিযুক্ত ভাড়াটে রাজেশ এবং তাঁর স্ত্রী সুনু গুপ্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটি নিজেই পড়ে গিয়েছিল না ফেলে দেওয়া হয়েছিল, দেখা হচ্ছে। এক তদন্তকারী জানিয়েছিলেন, ওদের ভা়ড়াটে-বাড়িওয়ালার পুরনো ঝগড়া আগেও থানায় এসেছিল। শিশুটির বাবা-মা তাকে বাঁচানোর কথা বলছেন কম, ভাড়াটে তাড়াতেই বেশি ব্যস্ত।
আরও পড়ুন: থামছে না কান্না, অগ্নিদগ্ধ শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক
উল্টোডাঙার গোরাপদ সরকার লেনের বাসিন্দা শিশুর পরিবারের দাবি, ওই দিন সকালে শিশুটির চিৎকার শুনে তার মা অঞ্জনা ভুঁইয়া দেখেন, রাজেশের ঘরে গরম হাঁড়ির উপর পড়ে শিশুটি প্রচণ্ড চিৎকার করছে। ঠান্ডা জল এনে মেয়ের গায়ে ঢালছেন রাজেশ এবং সুনু। রাজেশই শিশুটিকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘুরিয়ে পরে শিশুটিকে এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, শিশুটির শরীরের ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
অভিযুক্ত রাজেশ আর তাঁর স্ত্রী পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন, শিশুটি ঘরের দরজা দিয়ে উঁকি মারছিল। পাশেই স্টোভে ভাত হচ্ছিল। হঠাৎ পড়ে যায় হাঁড়ির উপরেই। তাঁদের আরও দাবি ছিল, ‘‘আসলে আমাদের বাড়ি ছাড়া করতে চাইছেন ওঁরা।’’
বস্তিতে টালির চালের ছোট ঘরে বাবা-মা আর ন’মাসের ভাইয়ের সঙ্গে থাকত শিশুটি। মা অঞ্জনা গৃহবধূ। বাবা সুষেণ লরি চালান। সেই সঙ্গে ভাড়ার টাকায় সংসার চলে।