‘দুর্নীতি’, শো-কজ দুই কাউন্সিলরকে

দুর্নীতির সঙ্গে তিনি যে কোনও ভাবেই আপস করেন না সেই বার্তা দলীয় নেতাদের বারবারই দিয়ে এসেছেন। কিন্তু দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই সতর্কবার্তা যে দলেরই কাউন্সিলরদের কেউ কেউ গ্রাহ্য করছেন না তা প্রকাশ্যে এল হাওড়ার দুই তৃণমূল কাউন্সিলরকে কারণ দর্শাতে বলার পরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৪০
Share:

দুর্নীতির সঙ্গে তিনি যে কোনও ভাবেই আপস করেন না সেই বার্তা দলীয় নেতাদের বারবারই দিয়ে এসেছেন। কিন্তু দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই সতর্কবার্তা যে দলেরই কাউন্সিলরদের কেউ কেউ গ্রাহ্য করছেন না তা প্রকাশ্যে এল হাওড়ার দুই তৃণমূল কাউন্সিলরকে কারণ দর্শাতে বলার পরে।

Advertisement

সরকারি ভাবে ওই কাউন্সিলরদের ‘দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গে’র অভিযোগে কারণ দর্শানোর কথা বলা হলেও সূত্রের খবর, অভিযোগ মূলত দুর্নীতির। এক জনের বিরুদ্ধে প্রোমোটারের থেকে তোলাবাজির অভিযোগ। অন্য জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জোর করে কারখানা ও বাড়ি দখল করে টাকা চাওয়া এবং প্রতিবাদ করায় দলের এক নেতাকেই খুনের হুমকি দেওয়া।

হাওড়া জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, হাওড়া পুরসভার ওই দুই কাউন্সিলর হলেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সৌরভ দাস ও উত্তর হাওড়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবিত্রী সাউ। সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরে দলীয় নেতৃত্বের কাছে ওই দুই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়ছিল। বার বার অভিযোগ পাওয়ার পরে অবশেষে গত শনিবার দলের পক্ষ থেকে তাঁদের ‘শো কজ’-এর চিঠি পাঠানো হয়। চিঠি দেন দলের হাওড়া জেলার সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়।

Advertisement

সোমবার অরূপবাবু বলেন, ‘‘দলের কাছে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল। তাই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। উত্তর দিতে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। উত্তর পাওয়ার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ঠিক কী শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন ওই কাউন্সিলরেরা বা সন্তোষজনক উত্তর না পেলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে নিয়ে মুখ খুলতে চাননি অরূপবাবু। তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি এখনই কিছু বলবেন না।

তবে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌরভবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের এলাকায় একাধিক বেআইনি নির্মাণে মদত দিচ্ছিলেন এবং তাঁর দলবল এলাকার প্রোমোটারদের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করছিল। কয়েক দিন আগে একটি বহুতলের সামনে গিয়ে তাঁরই ঘনিষ্ঠ ওই ওয়ার্ডের এক পদাধিকারীর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র যুবক নির্মাণকর্মীদের প্রাণে মারারও হুমকি দিয়ে আসে বলে অভিযোগ। আতঙ্কিত ওই প্রোমোটার শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ও জেলা সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানালে বিষয়টি দলের নজরে আসে। অভিযোগ অস্বীকার করে সৌরভবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি এর কিছুই জানি না। তবে দল চিঠি দিলে নিশ্চয়ই উত্তর দেব।’’

দলীয় সূত্রে খবর, প্রায় একই অভিযোগে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে সাবিত্রীদেবীকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ মূলত দু’টি। প্রথমত, তিনি এলাকার একটি কারখানা জোর করে দখল করে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে কারখানা খুলতে মোটা টাকা দাবি করেন। দ্বিতীয়ত, এলাকায় বেআইনি প্রোমোটারি ও দলের নেতাদের তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় উত্তর হাওড়ার তৃণমূলেরই এক নেতার বাড়িতে সশস্ত্র দুষ্কৃতী সঙ্গে নিয়ে গিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে আসা। এ নিয়ে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়। বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠিতে জানানোও হয়। এর পরেই সাবিত্রীদেবীকে কারণ দর্শাতে বলা হয় বলে দলীয় সূত্রে খবর। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাবিত্রীদেবী বলেন, ‘‘দলকে এ ব্যাপারে যা বলার বলব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement