প্রতীকী ছবি।
রাতের খাবার আনতে বন্ধুর সঙ্গে মোটরবাইকে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন এক যুবক। যাওয়ার পথেই ম্যাটাডরের সঙ্গে মোটরবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় দুই বন্ধুর। সোমবার, বিধান সরণির ঘটনা। মৃতদের নাম সঞ্জয় মণ্ডল (৩২) এবং সঞ্জীব সিংহ (৩৬)।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটের বাসিন্দা সঞ্জয় এবং সঞ্জীব পাড়ার গণেশ পুজোর মণ্ডপ তৈরির কাজ দেখছিলেন এলাকার অন্যদের সঙ্গে। সঞ্জয়ের স্ত্রী বর্ষা গিরিশ পার্কে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন। রাতে সেখান থেকে সঞ্জয়ের খাবার নিয়ে আসার কথা ছিল। রাত বাড়তে দেখে সঞ্জয় বন্ধু সঞ্জীবের সঙ্গে মণ্ডপ থেকেই অন্য এক বন্ধুর মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন গিরিশ পার্কের উদ্দেশে।
পুলিশ জানায়, বিধান সরণি দিয়ে যাওয়ার সময়ে সামনে ট্রামলাইনের ছিঁড়ে পড়া একটি তার এড়িয়ে ডান দিক ঘেঁষে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। তখনই উল্টো দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি ম্যাটাডরের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় বাইক থেকে ছিটকে যান সঞ্জয় ও সঞ্জীব। ঘটনাস্থলেই মারা যান সঞ্জয়। সঞ্জীবকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলেও রাত ২টো নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার সকালে কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে গিয়ে দেখা গেল দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। সঞ্জয়ের জ্যাঠতুতো দাদা মুন্না জানান, একটি সংস্থার হয়ে গাড়ি চালাতেন সঞ্জয়। বাড়িতে তাঁর মা, স্ত্রী ছাড়া ছ’বছরের মেয়ে ও তিন বছরের ছেলে রয়েছে। স্থানীয়েরা জানান, পরিবারে সঞ্জয়ই ছিলেন একমাত্র রোজগেরে। আকস্মিক দুর্ঘটনায় হতবাক হয়ে সঞ্জয়ের স্ত্রী বর্ষা বারবার বিলাপ করে চলেছেন, ‘‘খাবার আনতে আসবে বলে আমি অপেক্ষা করছিলাম, কিন্তু এ কী হল!’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকারই বাসিন্দা সঞ্জীব বাড়ির ছোট ছেলে। লোহার দোকানে কাজ করতেন তিনি। বাড়িতে বাবা ও দাদাকে নিয়েই তাঁর সংসার। ছোট ছেলের হঠাৎ মৃত্যুতে হতবাক তাঁর পরিবারও। পুলিশ জানিয়েছে, মোটরবাইক এবং ঘাতক ম্যাটাডরটি আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ম্যাটাডরের চালক হোসেন মোল্লাকে।